অফিস নামা — প্রথম পর্ব

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছো সবাই? অনেক লম্বা একটা গ্যাপ দিয়ে আবার তোমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমি ইশরাত। আমাকে হয়তো কারোই মনে নেই। অবশ্য মনে থাকার কথাও নয়। এক বছরের ও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। তাই নতুন করে আবার পরিচিত হই কেমন। আমি ইশরাত জাহান স্নেহা। বয়স এখন প্রায় ২৭ ছুই ছুই। বৌদি বা ভাবী বলতে যে কনসেপ্ট টা সকলের মাথায় আসে, এখন আমি পুরোদস্তুর তাই। দেড় বছর আগেকার আমি আর এখনকার আমিতে অনেকটা চেঞ্জ। পারফেক্ট ভাবী ম্যাটেরিয়াল। উচ্চতা আমার ৫ ফিট ৪ ইঞ্চি।

আগের যে কাহিনীটা শেয়ার করছিলাম তখন আমার ওজন ছিলো ৫২ কেজি। স্লিম গড়ণের মেয়ে ছিলাম আমি। আর এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৫৭ কেজি। গায়ের রঙ আগের মতোই ফরসা আছে। কালো আর হালকা বাদামী চুলগুলো ইয়োলয়িশ কালার করিয়ে নিয়েছি। মানে বাংগালী ব্লন্ড আর কি। ৩৪ সাইজের ব্রা এখন ৩৬ সাইজের ডি কাপ। লালচে বোটা দুটো এখন আরও বেশি ডিপ কালার। বুঝতে অসুবিধা হবার কথা না যে বক্ষযুগল বেশ সুঢৌল আমার। গভীর নাভি। পেটে হালকা মেদের আস্তরণ। ৩২ কোমড়। পাছাটা ৩৬ থেকে বেড়ে একেবারে ৪০ এ এসে ঠেকেছে। তবে ফ্লাপি হলেও এখনও যথেষ্ট টাইট এবং রাউন্ড।

আমার আজকের গল্পটাও কোন বানানো কাহিনী না। একদম জীবনের গল্প। এই গল্পটা একটু দীর্ঘ আর বেশ কিছু চরিত্র নিয়ে গড়া। একটু একটু করে এগুনোর সাথে সাথে চরিত্রগুলোকেও সামনে নিয়ে আসবো কেমন। কি! শোণার ধৈর্য হবে তো? দেখা যাক কতদূর কি লিখতে পারি। শুরুতেই দুজনার সম্পর্কে বলতে হবে। এক, আমার বস আর দুই, আমার কলিগ। আমি ছাড়া বাকি দুটো প্রধান ক্যারেক্টার এই দুজনাই।

আমার বস খন্দকার আশ্রাফ আলী। ৫২ বছরের এক প্রচন্ড মাগীবাজ একজন লোক। মাগীবাজ বলে মাগীবাজ; একদম লেভেল লাগানো মাগীবাজ। কত মেয়ের যে সর্বনাশ করেছেন তার সংখ্যা উনি হয়তো নিজেও গুণে শেষ করতে পারবেন না। আমাদের অফিসেরই তো তিনজন মেয়ে তার ভোগ লালসার শিকার । এদের মধ্যে সবচাইতে লেটেস্ট এডিশন ছিলাম আমি। এই অফিসে আমার চাকরির বয়স ছয় মাস। আর এই ছয় মাসেই নানান রকমের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়েছে। যাইহোক আশরাফ স্যার উঁচু লম্বা সুঠাম দেহের অধিকারী একজন সুপুরুষ। হী ইজ দ্যা টাইপ অফ গাই আই এডমায়ার। উচ্চতা প্রায় ৬ ফিটের কাছাকাছি। মানে আমার চেয়ে প্রায় ৭ ইঞ্চি লম্বা। চওড়া কাঁধ, চওড়া বুক। নিজেকে বেশ ভালোভাবে মেইনটেইন করে রেখেছেন। রেডমিট একেবারেই খাননা। লাল মাংস বলতে নারী শরীরটাকেই উনি বোঝেন।

এবার আসি গল্পের আরেক নায়িকাকে নিয়ে।
উনি সুদেষ্ণা পাল শিখা। বয়সে আমার এক বছরের বড়। আমি ওনাকে শিখা দি বলেই ডাকি। টিপিক্যাল বাংগালী হিন্দু ঘরের বউ। আমার আজও মনে আছে, প্রথম যেদিন ওনাকে আমি দেখি শাখা সিদুরে কি মিষ্টিটাই না লাগছিলো ওনাকে।

আশ্রাফ স্যার শুধুমাত্র ভোগের উদ্দেশ্যে এই মেয়েকে চাকুরী দিয়েছে সে কথা আমি প্রথমেই বুঝেছি। উনি কি পরিমাণ নারী আসক্ত লোক সেটা আমার চেয়ে ভালো আর কজন জানে। ৬ মাসে তিনটা কক্সবাজার ট্যুর এটেন্ড করেছি আমি। আর অফিসিয়াল কাজের কথা বলে সেখানে যে ভোগলালসার চলে সেটা অফিসের সবাই বোঝে। এতোদিন ধরে তার লালসার কেন্দ্রবিন্দু ছিলাম আমি। আমি আসার আগে ছিলেন হেলেন আপা। ৬ বছরের বাচ্চার মা হেলেন আপাকে প্রায় আডাই বছর ধরে নিংড়ে সম্ভোগ করেছেন আমাদের এমডি স্যার।

আমি যখন চাকুরীতে জয়েন করি তার দুদিন পরেই একদিন আড়ালে ডেকে আমাকে সব বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন হেলেন আপা। বলেছিলেন এই অফিসে তারাক্কি করতে চাইলে একটাই মূলমন্ত্র এমডি স্যারের মন জুগিয়ে চলা। অফিসের বাইরে তাকে যথেষ্ট সময় দেওয়া। তার শরীর আর মনের তৃপ্তির কারণ হওয়া। এসবে যদি আমার আপত্তি না থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। আর যদি আপত্তি থাকে তবে যেন যত দ্রুত সম্ভব আমি চাকুরি ছেড়ে চলে যাই।

চাকুরী ছাড়ার কথা তখন আমার মাথাতেও আসেনি। কর্পোরেট জগতের রঙ্গীন দুনিয়া হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আর শাইন করতে গেলে কিছুটা তো কম্প্রোমাইজ করতেই হয়। তাছাড়া লোকটা একটু বয়স্ক হলেও দেখতে বেশ দারুণ। বেশ হ্যান্ডসাম আর সুঠাম দেহের অধিকারী। আর মাঝবয়েসী লোকেদের প্রতি আমার আবার আলাদা আকর্ষণ। তাই বেশ সুখেই উপভোগ করেই চলেছি বসের সাথে আমার পরকীয়া প্রেম। এখন হয়তো শিখাদি হবে তার কামনা নিবারণের প্রধান হাতিয়ার।

চলে যাই সেদিনের কথায়। অফিসে ঢুকতেই হেল্প ডেস্কের রওনক আপা টন্ট করার সুরে বলল, “স্নেহা, তোর কম্পিটিটরর এসে গেছে রে।“
আমি কিছু বুঝতে না পেরে হালকা হেসে বললাম, ‘মানে?’

– মানে আর কিছু না। বস নতুন সেক্রেটারি খুজছিলো না অনেকদিন ধরে! ফাইনালি পেয়েছেন ওনার মন মতো। আর এর মানে যে কি তুমি নিশ্চয়ই বুঝেছো।’

বুঝবো না আবার। আমিও তো শুরু করেছিলাম ওনার সেক্রেটারি হয়েই। তারপর মন জুগিয়ে এখন ডিরেক্ট দুই ধাপ উপরের পোস্টে। মানে নতুন এই মেয়েটাকেও মোলেস্ট হতে হবে। তারপর এই অফিসে টিকে থাকতে গেলে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। আমি আপাকে বললাম, ‘ তাই নাকি। তা, কই সেই মেয়ে?’

– বসের রুমেই। আজ এপয়েন্টমেন্ট লেটার পেলো। আজ থেকেই নাকি তার কাজ শুরু।
– বাব্বা এতো তাড়া বসের। দেখতে হচ্ছে তো মেয়েটা কেমন।

– ওমা তুই এখনো দেখিসনি। পিচ্চি করে মেয়েটা। শর্ট অনেক। তবে সেই লেভেলের সুন্দরী। তোকে টক্কর দেবার মতোন।

আপার সাথে কথা বলছি তখন বসের রুম থেকে উনি বের হলেন। আর তার ঠিক পেছনেই বের হলো নতুন একটি মেয়ে যাকে আগে কখনো আমি এই অফিসে দেখিনি। ধবধবে ফর্সা। ছোটখাটো গড়নের। ৫ ফিট এক ইঞ্চির মতোন হাইট। কিন্তু সেই শরীরের প্রতিটি অংশ থেকে যেন কামরস চুইয়ে পড়ছে। অসামান্য রূপবতী। কালো লম্বা চুল কোমড় পর্যন্ত ছাড়ানো। বুবস খুব সম্ভবত ৩৬ হবে। যেভাবে খাড়া খাড়া হয়ে আছে তাতে বেশ বোঝা যায় প্যাডেড ব্রা পড়া। মেরুন শাড়ি, ডিপ গ্রীন ব্লাউজ, ডার্ক মেরুন লিপস্টিক। কপালে ছোট্ট একটা টিপ। এক ধরনের শুভ্রতা আছে মেয়েটার মুখশ্রীতে। পেটে আমার মতোই হালকা এক পোস্ত মেদের আস্তরণ। প্রথম দেখাতেই মন হরণ করার মতো কিছু একটা আছে এই মেয়ের মধ্যে। বুঝতে পারলাম বস কেন এতোটা উতলা।

বস হাস্সোজ্যল মুখে এগিয়ে এলেন। বললেন, ‘ইশরাত, মীট মাই নিউ সেক্রেটারি সুদেষ্ণা। এন্ড সুদেষ্ণা, সি ইজ ইশরাত, দ্যা মোসট সিনসিয়ার ইম্পোয়ি অফ আওয়ার অফিস।’

আমরা মৃদু হেসে একজন আরেকজনের সাথে পরিচিত হলাম।
– আমি ইসরাত । এই এড এজেন্সির ট্যালেন্ট হান্ট সেক্টর টা লিড করছি।
– আমি সুদেষ্ণা পাল। পারসোনাল সেক্রেটারি হিসেবে আজকেই জয়েন করলাম।

বস বললেন, সুদেষ্ণা তুমি মোটেও চিন্তা করবেনা। ইশরাত ইজ মাই ডিয়ার গার্ল। ও তোমাকে সবকিছু শিখিয়ে দেবে। a to z. তোমার এপেয়ারেন্স থেকে শুরু করে অফিসের সমস্ত কাজ। সি ইজ দ্যা বেস্ট। এন্ড সি উইল মেইক ইউ দ্যা বেস্ট।
– স্যার, সবার সামনে এভাবে আমাকে লজ্জায় ফেলে দিবেন না।
– আমি কোন সুনাম করছি না ইশরাত। ইটস আ ফ্যাক্ট। ইউ আর আল্টিমেটলি দ্যাপ বেস্ট।এন্ড আই এম সিওর যে তুমি সুদেষ্ণা কেউ বেস্ট বানিয়ে তুলবে।

সেদিনের মতো আমাদের এতোটুকুই কথা হলো। আমি শুধু ভাবছিলাম এই মেয়েটার কথা। স্নিগ্ধতা ছড়ানো এই মেয়েটা কি পারবে এই অফিসে টিকে থাকতে? বস যাকে পছন্দ করেছে তাকে এতো ইজিলি তো যেতে দেবেনা। মেয়েটা যদি তার হ্যা তে হ্যা নাও মেলায়, শেষ পর্যন্ত তাকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে তাড়ানো হবে অফিস থেকে। যেমনটা হয়েছিলো অনন্যার সাথে।

এর পরের দুদিন আমি ক্যাজুয়াল লিভ নিয়েছিলাম। ছুটি শেষে অফিসে গিয়ে সুদেষ্ণার সাথে লবিতে দেখা হয়ে গেলো। মিষ্টি হাসিতে কুশল জিজ্ঞেস করল আমার। দুদিন অফ দেয়ার পরে বেশ খানিকটা কাজ জমে গিয়েছিলো। তাই আর কথা এগুলো না। বিকেলে বসের রুমে তলব পড়লো আমার। গিয়ে দেখি সুদেষ্ণাও বসের রুমে। সোফাতে বসা।

– কি খবর তোমার ইশরাত ছুটি কেমন কাটলো?
– জি স্যার, ভালো। যে কাজ নিয়েছিলাম সেটা হয়েছে।
– তা বেশ ভালো ভালো। তোমাদের দুজনের মাঝে তো আর আলাপচারিতা হয়নি তাই না?
– আজকে লবিতে দেখা হয়েছিল। সেভাবে এখনও আলাপ হয়ে ওঠেনি।
– সো বিং দ্যা সিনিয়র ইউ সুড প্রসিড। তোমাকেই তো হাতটা বাড়াতে হবে।

আর এইযে সুদেষ্ণা, আলাপ পরিচয় বাড়াতে হবে না অফিসের সবার সাথে!
আমরা দুইজনই সম্মতি সূচক কথা বললাম। স্যার আমাদের আপকামিং প্রজেক্ট সম্পর্কে আমাদের দুজনকে কিছু কিছু সাজেশন দিলেন। তারপর ফেরার পথে বাইরে কফিশপে আমরা তিনজন একসাথে কফি খেলাম। দেন স্যার আমাদের দুজনকে ড্রপ করে দিয়ে গেলেন।

পরদিন অফিস ক্যান্টিনে সুদেষ্ণার সাথে আমার বেশ অনেকক্ষণ কথা হল। বলতে গেলে সেদিনই প্রথম আমরা একে অপরকে জানলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি কিছুটা কনফিউশনে ছিলাম যে উনি আমার চাইতে সিনিয়র হবেন নাকি জুনিয়র। তাই জিজ্ঞেস করে ফেললাম, ‘আচ্ছা আমার মনে একটা প্রশ্ন কাজ করছে। জিজ্ঞেস করি?’
– হ্যাঁ, অবশ্যই বলুন।

আপনি আমার জুনিয়র হবেন নাকি সিনিয়র ঠিক বুঝতে পারছি না।

– আমার মাধ্যমিক ২০০৮ এ।
– ওহ, তার মানে আপনি আমার সিনিয়র। আমার ২০০৯ এ
– ১ বছরের সিনিয়র আবার সিনিয়র হয় নাকি! আমরা সমবয়সী। বন্ধুর মতোন।
– হ্যাঁ, তা ঠিক বলেছেন। তবু এখন থেকে আমি আপনাকে দিদি বলে ডাকবো আপনার যদি কোন আপত্তি না থাকে।
– না না আপত্তি থাকব কেন অবশ্যই দিদি বলে ডাকবেন।
– ঠিক আছে। তাহলে যে আমাকে আপনার তুমি করে ডাকতে হবে।
– আচ্ছা, সে নাহয় ডাকলাম কিন্তু দিদি বলে যখন ডেকেছো তখন আপনি বলা তো ঠিক না। আমাকেও তুমি বলে ডাকতে হবে।
– ওকে ডান এখন থেকে আমরা দুজনই তুমি তুমি।
একদন্ড প্রাণখোলা হাসি দিলাম দুজনে।।

– এই দিদি, তোমার বেবি নেই?
– না, এখনো নিইনি।
– বিয়ের ক বছর হল?
– এইতো প্রায় সাড়ে তিন বছর। তুমি কি বিবাহিত?
– হ্যাঁ, দিদি আমি বিবাহিত। আমার প্রায় দু’বছর হচ্ছে।
– বেবি নিয়েছো।
–না, দিদি মাঝখানে প্ল্যাণ ছিল কিন্তু সামনে আমার হাজবেন্ডের বিদেশে যাচ্ছে তো তাই আপাতত সব পোস্টপন করা হয়েছে।
–ও আচ্ছা আচ্ছা।
— তো দিদি বাসাতে কে কে আছে তোমার?
— আমার হাসবেন্ড, শ্বশুর শাশুড়ি আর এক ননদ। তোমার বাসায়?
— আমার বাসায় আমি, আমার বর আর ওর ছোট ভাই। অনার্স করছে ও। শশুর মাঝে মাঝে দেশের বাড়ি থেকে আসে। সেবা-শুশ্রূষা নিয়ে আবার চলে যায়। তারপর বল নতুন অফিস কেমন লাগছে?
— খারাপ লাগছে না। বসের অ্যাসাইনমেন্ট গুলো ঠিকঠাক খেয়াল রাখছি। আর আপাতত অন্য কোন কাজ আসলে দেয় নি উনি আমাকে।

আমি মনে মনে ভাবলাম যে এই সরল মিষ্টি মেয়েটা না জেনে কিসের ফাঁদে পা দিয়েছে। আচ্ছা, ওনাকে কি আমি জানিয়ে দিব। যেভাবে নওরীন আপা আমাকে সাবধান করে দিয়েছিলো। আমারও ওনাকে সাবধান করে দেয়া উচিত।
–শিখা দি তোমাকে আমার খুব ভালো লেগেছে।তাই তোমাকে কিছু কথা….. বলতে যাব ঠিক সেই মুহূর্তে বস ওনার রুম থেকে বের হয়ে আসলেন। উনি কি তাহলে এতক্ষণ ধরে আমাদের কথা শুনছিলেন।

চলবে……