যৌবনের টিউশন পর্ব ১

ডিভোর্সের পর বাড়িতে চলে আসি আর ১বছরেই ভাবির আচরনে বুঝতে পেরেছি যে আমি বাড়ির বোঝা হয়ে গিয়েছি, তাই ভাবলাম নিজে কিছু ইনকাম করলে নিজের আর ছেলের খরচটা নিজেই চালাতে পারবো তাই অনেক কষ্ট করে একটা টিউশনি জোগার করলাম, তা দিয়ে মোটামুটি ছেলের স্কুলের খরচ মেটাতে পারতাম। ১২ বছরের বিবাহিত জীবনে সুখ নামের পাখিটা আমার কাছে খুব কমই এসেছে, না পেয়েছি স্বামীর ভালোবাসা আর না পেয়েছি শশুড় শাশুড়ির ভালোবাসা তাই ডিভোর্সের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।

যাই হোক আসল গল্পে আশা যাক, টিউশনি পড়াতে প্রতিদিন জ্যাম ঠেলে রাহুলদের বাড়িতে যেতে প্রায় ৩০/৪০ মিনিটের মতো লাগতো দুপুরে যেতাম ২ঘন্টা পড়িয়ে আবার বিকালে বাড়িতে আসতাম। রাহুল খুব শান্ত প্রকৃতির ছেলে তেমন বন্ধুবান্ধবও নেই, ওর আম্মু আব্বু ওকে কারো সাথে মিশতেও দেয়না সারাদিন বাড়িতেই থাকে। একদিন পড়াতে বসতেই ওর আম্মু ওকে নিচের দোকান থেকে বাড়ির কিছু বাজার নিতে পাঠায়, আমি বসে বসে ফেসবুক দেখছিলাম অনেকগুলো ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট জমা পরে আছে, হঠাৎ আমার চোখ যায় একটা মোটা বইয়ের ভিতরে ওখানে কিছু একটা রাখা আছে আমি সেটা দেখতে বইটা হাতে নেই, ভিতরে দেখবো কি আছে এমন সময় রাহুলের আম্মু চলে আসে তখন আমি বইটা রেখে তারসাথে গল্প শুরু করি। কিছুক্ষন পর রাহুল এসে বইটা আমার সামনে দেখে কেমন যেনো কেমন যেনো হয়ে যায় আর বইটা আমার সামনে থেকে নিয়ে ওর পড়ার টেবিলে রেখে দেয়, তখন ওর আম্মু রুম থেকে চলে যায়। আমি পড়ানো শেষ করে ওইদিন বাড়ি চলে আসি। রাতে শুয়ে শুয়ে ফেসবুক চালাচ্ছিলাম তখন রাত প্রায় ১১টা, হঠাৎ Unknown একটা রিকুয়েষ্ট আসে আমিও এক্সেপ্ট করি আর সাথে সাথে ম্যাসেজ আসে –

Unknown – হাই কেমন আছেন?
আমি- জ্বী ভালো, আপনি?
Unknown – আমিও ভালো আছি, কি করছেন?
আমি- এতো রাতে কি করে মানুষ! ঘুমানোর চেষ্টা করছি আর ফেসবুক চালাচ্ছি। আপনি?
Unknown – কতো কিছুই তো করতে পারে! আমি গল্প পড়ছি আর আপনার সাথে চ্যাটিং।
আমি- হুম বুঝলাম, তো কি গল্প পড়ছেন?
Unknown – এটা বলা যাবেনা আপনি মাইন্ড করবেন।
আমি- ওমা গল্প পড়ছেন তাতে মাইন্ড করার কি আছে!
Unknown – না না মাইন্ড করার অনেক কিছুই আছে, আজই আপনার সাথে পরিচিত হচ্ছি এখনি সব বলে ফেললে আপনি মাইন্ড করতেই পারেন।
আমি – আরে না কি যে বলেন! আমারও গল্প পড়তে ভালো লাগে তাই শুনতে চাচ্ছি।
Unknown – আপনি যেমন গল্প পড়েন এটা আসলে তেমন গল্প না, এটা একটু অন্যরকম গল্প। র রোমান্টিক গল্প।
আমি – আমারও রোমান্টিক গল্প ভালো লাগে।
টেলিগ্রাম- tabootale
Unknown – আচ্ছা পড়ে বলবো কি গল্প।
আমি- আচ্ছা ঠিক আছে।
unknown – আচ্ছা আপনি কি সিঙ্গেল?
আমি- হঠাৎ এমন প্রশ্ন?
Unknown – না এমনি, আপনার আইডিতে কোনো ছবি রিলেশনশীপ দেয়া নেই তো তাই আর কি।
আমি- আপনার আইডিতেও তো এগুলো দেয়া নেই তাতে কি হইছে, যাই হোক আমার একটা ছেলে আছে ক্লাস ফাইভে পড়ে তবে এখন আমি সিঙ্গেল।
Unknown – ওহ তাহলে চ্যাটিং করতে সমস্যা নেই, বাবু কি ঘুমাচ্ছে?
আমি- হ্যা, ও আমার সাথেই ঘুমোয়।
Unknown – যদি কিছু মনে না করেন আপনার একটা ছবি দেয়া যাবে একটু দেখবো আপনাকে।
আমি- না না ছবি দেয়া যাবেনা। চিনিনা জানিনা এমনকি নামও জানিনা
Unknown – please please please নাম জানতে সমস্যা কি! আমার নাম অর্জুন
আমি – সরি অর্জুন সম্ভব না।
অর্জুন – মন টা খারাপ হয়ে গেলো ভাবলাম আপনাকে একটু দেখবো।
আমি – আচ্ছা ঠিক আছে তবে দেখেই delete করে দিবেন।
অর্জুন – আচ্ছা ঠিক আছে।

তারপর অনেক খুজে খুজে গ্যালারি থেকে কালো শাড়ি পরা একটা ছবি পাঠিয়ে দিলাম।

অর্জুন- ওয়াও You are So beautiful and sexy

আমি – থ্যাংকস এখন delete করেন।
অর্জুন – ঠিক আছে করছি। কিন্তু আপনি সত্যিই অনেক সুন্দর আর শাড়িতে আপনে অনেক সুন্দর লাগে, আপনি কি রেগুলার শাড়ি পরেন?
আমি- না না রেগুলার না।
অর্জুন – শাড়ি পড়বেন আপনাকে অনেক মানায়।
আমি- আমি তো আপনাকে দেখলাম না, আপনার একটা ছবি দিন।
অর্জুন – আমি তো কম্পিউটার থেকে চ্যাট করছি আর কম্পিউটারে আমার কোনো ছবি নেই, অন্য কোনো দিন ছবি দিবো।
আমি- আচ্ছা ঠিক আছে।
অর্জুন – ঠিক আছে আজ রাখি অনেক রাত হয়ে গেছে আপনারও তো ঘুমোতে হবে।
আমি – হ্যা ঘুমোবো এখন, ঠিক আছে রাখি তাহলে।
অর্জুন – ওকে বাই গুড নাইট
আমি- গুড নাইট

অর্জুনের সাথে কথা বলা শেষ হতেই আমার ছেলে জয় বলে উঠলো আম্মু আমার কেমন যেনো লাগছে, ওর গায়ে হাত দিয়ে দেখি জ্বরে গা পুরে যাচ্ছে তারাতাড়ি উঠে ওকে কিছুক্ষন জলপট্টি দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি তখন জয় আম্মু আমার খুধা পেয়েছে, উঠে রান্না ঘরে গিয়ে দেখি খাবারের কিছু নেই ছেলেটা আমার এই জ্বর শরীরে কিছু না খেলে জ্বর আরো বেশি হবে কিন্তু এতো রাতে দোকানেও যেতে পারছিনা। ওকে গিয়ে বললাম বাবা বাড়িতে তো এখন খাবার কিছু নেই। তখন জয় বল্লো তুমি তো আমাকে ছোটবেলায় তোমার দুধ খেতে দিতে কিন্তু এখন আর আমাকে দুধ খেতে দেওনা তুমিকি আমাকে আর আগের মতো ভালোবাসোনা?

ওর কথা শুনে আমি হাসবো না কাদবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
আমি- না বাবা ভালোবাসি কিন্তু এখন যে তুমি বড় হয়ে গেছো তাই আর খাওয়া যাবেনা।
জয়- কেনো যাবেনা? তুমি আমাকে ভালোইবাসোনা এখন আর।
আমি- আরে পাগল এখন আর দুধ বের হয়না তুমি খাবে কি আর মানুষ শুনলে কি বলবে এতো বড় ছেলে এখনো মায়ের দুধ খায়।
জয়- আমি খেলে মানুশ কিভাবে দেখবে! আমি তো লুকিয়ে লুকিয়ে খাবো।
আমি- এখনো ঘুমিয়ে পড় বাবা এসব বলতে হয়না।
জয়- যাও তুমি আমাকেই ভালোইবাসোনা।
আমি- ফোনে গেম বের করে দিবো? খেলতে খেলতে ঘুমিয়ে যাও!
জয়- আমার অনেক খুধা লেগেছে, গেম দিয়ে কি পেট ভরবে?
আমি- বাসায় তো খাবার কিছু নেই বাবা।

আমার কথা শুনে দেখলাম মন খারাপ করে চুপ হয়ে গেলো, কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না, একটু পর দেখি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না শুরু করলো, জ্বরও এসেছে অনেক, আমি জড়িয়ে ধরতে চাচ্ছি কিন্তু ধাক্কা দিয়ে আমাকে সরিয়ে দিচ্ছে, গায়ে কম্বল দিয়ে দিচ্ছি সেটাও ফেলে দিচ্ছে, আমার কোনো কথাই শুনতে চাচ্ছেনা, রাগ করে একটা চড় দিয়ে বসলাম তাতে আরো বেশি কান্না করতে শুরু করলো, আমিও নিজেরই ভুল বুঝে কাছে টেনে আদর করতে করতে বুঝাতে লাগলাম। ও তো কথাই শুনতে চায়না

জয়- আমি যদি এখন মরে যাই তখন তুমি কি করবে?
আমি- পাগল ছেলে এসব বলতে হয়না। আমি থাকতে তোমার কিছু হবেনা।
জয়- তুমি তাহলে আমাকে খেতে দিচ্ছোনা কেনো?
আমি- এতো রাতে কোনো দোকানই খোলা নেই সোনা।
জয়- চলো আমরা বাহিরে যাই

চলবে…..