ফেসবুকে পরিচয় থেকে পরকিয়া পর্ব ২

গত পর্বে যে এডভোকেট এর কথা বলে ছিলাম উনি এখনও সময় বের করতে পারেন নাই। তবে এবারের ঈদের ছুটি শেষে ডেট ফাইননাল করবে। উনার সাথে কক্সবাজার ঘুরে এসে আপনাদের আপডেট জানিয়ে দেবো। ।

আপনারা যারা আমার গল্পে কষ্ট করে কমেন্ট করেছেন তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আরও ধন্যবাদ জানাই সেই সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের যারা শত ব্যাস্ততার মাঝেও আমার Eexan Khan ফেসবুক আইডিতে এবং yahoo আইডিতে গল্পের পরবর্তী আপডেট জানতে চেয়েছেন।

আমি ফেসবুকের কল বয় হোম সার্ভিস গ্রুপে একটা পোষ্ট করেছিলাম –

ঢাকার মধ্যে কোন মেয়ে কল বয় হোম সার্ভিস নিতে আগ্রহী হইলে আমাকে নক দিবেন। নিচে আমার বিস্তারিত তুলে ধরা হইলো-

নাম – কল বয়।
বয়স – ৪০+
উচ্চতা – ৫’৫”
ওজন – ৬২ কেজি
যন্ত্র – ৭+
রং – শ্যামলা
এই পোষ্টের পরে আমার সাথে তিনটি ঘটনা আলাদা আলাদা ঘটে, আজ আমি আপনাদের সেই ঘটনা গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো-
এক নম্বর ঘটনা –
স্থান ভুলতা গাউছিয়াঃ
Mst Nusrat Jahan….. আইডি থেকে নক দেয়।
Hello
hi
আপনি কি কল বয়
জি
আপনি কি আজ সার্ভিস দিতে পারবেন?
জি
বেশি সময় লাগবে না ৬ টায় আসলে রাত ৯ টা ১০ টার মধ্যে চলে যেতে পারবেন।
সমস্যা নেই, লোকেশন বলেন।
আপনি ভুলতা গাউছিয়া এসে নক দেন।
ওকে
এর পরে আমি ঠিক ৬ টা সময় ভুলতা গাউছিয়া গিয়ে বাস থেকে নেমে নক দেই।

নক দেওয়ার পরে উত্তরে বলে যে, আপনি একটা সেলফি দেন। সেলফি তুলে দেওয়ার পরে বলে আমি তো আসতে পারছি না আপনি একটা রিক্সানিয়ে পশ্চিম পাড়ার জামে মসজিদের সামনে চলে আসেন। তার পরে ছোট ভাই কে পাঠিয়ে দেবো ও গিয়ে নিয়ে আসবে। আর হ্যাঁ আসার সময় অবশ্যই এক প্যাকেট কনডম নিবেন।

মনে একবার খটকা লাগলেও কনডম ক্রয় করে রিক্সায় উঠে বসলাম। ২০ নিনিট এর মতো রিক্সা চলার পরে মসজিদ পেলাম। সেখানে নেমে রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে নক দিলাম। কিন্তু নক দিয়ে দেখি নেটওয়ার্ক নেই। এক সিমে নেটওয়ার্ক পায় না বলে অন্য সিমের ডাটা ক্রয় করার জন্য মোবাইল রিচার্জ এর দোকান খুঁজতে শুরু করি। কিন্তু এই এলাকায় তেমন কোন দোকান দেখলাম না। চায়ের দোকানে চা খেলাম। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে টানছি আর পায়চারী করছি, কিছু সময় হাটাহাটি করতেই একটা পিচ্চি এসে আমাকে বলে আপনি কি নুসরাত আপুর কাছে এসেছেন? তাহলে আমার সাথে চলেন। আমি কোন কথা না বলে ছেলেটির সাথে সাথে পথ চলতে শুরু করলাম।

কিছুদূর যাওয়ার পরে একটা ফাঁকা স্থানে এসে উপস্থিত হই। সেখানে নতুন আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে, সবে মাত্র বালু দিয়ে ভরাট করছে। বালুর তিন দিকে ডোবার মতো কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। আমি ছেলেটিকে এবার বললাম এই কোথায় নিয়ে আসলে। ছেলেটি বলে এই তো এই ডেবা পার হলেই আপুর বাসা। মাঝি নৌকা নিয়ে আসলেই আমরা পার হবো। তখন সময় প্রায় ৭ টা কি ৭.৩০ চারিদিকে অন্ধকার। আশে-পাশে দেখে বুঝলাম আমি বিশাল ভুল করে ফলেছি। কিন্তু বুঝতে বেশি সময় ব্যায় হয়ে গিয়েছে। দূরের লাইটের আলোয় এটা বুঝতে পারছি যে, এই কচুরিপানায় কখনও কোন নৌকা বা অন্য কোন কিছু চলাচল করে নাই। তখন আমি বললাম যে, মাঝি কই? ডাক দাও মাঝিকে।

পিচ্চিটা বললো এখানেই ঘাট নৌকা আসবে এখনই। সে একটা নাম ধরে ঢাকলো। অন্ধকার থেকে আবছায়া দেখে বুঝলাম কয়েকজন মানুষ এদিকে আগিয়ে আসছে। আসতে আসতে বলছে ওই কে রে ওখানে? তোরা কারা? কথা বল। তখন ছেলেটা বলে ভাই আমি ওমুক। মানুষ গুলোর কথা শুনে বুঝলাম ওদের বয়সও বেশি নয়। তখন আমার কিশোর গ্যাং এর কথা মনে পরে গেলো। আর এটাও বুঝতে পারলাম যে আজ আর নিস্তার নেই। এমন একটা স্থানে এসে উপনীত হয়েছি যেখান থেকে পালানোর কোন উপায় নেই। আর যদি দৌড় দেই তবুও ওদের চেনা জানা পরিচিত বালুময় অন্ধকারে আমি দৌড়ে পারবো না।

এগুলো ভাবনার মাঝেই একটা ছেলে বলে উঠলো তুই এখানে অন্ধকারে কি করিস? সাথে কে? পিচ্চি টা বলে আমি কিছু জানি না। আমি পিচ্চি কে বললাম তুমি কিছু জানো না মানে? বলতেই পিচ্চি টা এক দৌড়ে অন্ধকারে হারিয়ে গেলো। ছেলে গুলোর মধ্যে একজন এসে আমার কলার চেপে ধরে বলে তুই এখানে কেন এসেছিস? তোর নাম কি? কোথায় থাকিস? বল। কশিয়ে একটা চড় মেরে বলে দেখি তোর কাছে কি আছে? আরও দুজন এসে আমাকে দু ঘা মেরে দেয়। পকেট থেকে কনডম বের করে বলে ওরে শালা মাগি পাড়ায় এসেছে কনডম নিয়ে। আমার মোবাইল, মানি ব্যাগ, সিগারেটের প্যাকেট, লাইটার, চাবি আর যা যা পায় ওদের কাছে নিয়ে নেয়।

আর একজন একটা লাঠি এনে আমার দুই ঠেং বরাবর একটা বারি মারে। এতে আমার এক পায়ের হাটুর নিচের দিকে হারে প্রচন্ড আঘাত লেগে যায়। আমি ওফ করে হাটুর নিচে হাত দিয়ে চেপে ধরতে একটু নিচু হতেই আরেক বারি বসিয়ে দেয় পাছার উপরে। আমি পাছায় হাত দিতেই আর একজন এসে আমাকে গলা জরিয়ে ধরে বলে একদম চিল্লাপাল্লা করবেন না। আর পালানোর চেষ্টা করবেন না তহলে একদম জানে মেরে দেবো।

বাপের বয়সি মানুষ এমন কাজ করতে এসেছেন। আসার আগে একবারও ভাবেন নাই এমন জঘন্য কাজ করতে আসছেন, ধরা পরলে কি হতে পারে। এখন যদি পুলিশের হাতে তুলে দেই তাহলে আপনার মান সনমান কোথায় যানে ভেবে দেখেন। আর আমাদের বড়রা যদি জানতে পারে তাহলে তো আপনাকে আস্ত রাখবে না। তার চেয়ে যা বলছি চুপচাপ মেনে নিয়ে সন্মানের সহিত চলে যান। আমি কি কাজ করি? কেমন আয় হয়? খরচ কেমন ইত্যাদি কথা সুনে বলে আপনি কল দেন বিকাশে ২০ হাজার টাকা আনেন।

চুপ থাকতে দেখে আর একজন এসে সজোড়ে চর মরে একটা গালি দিয়ে বলে টাকার এরেন্জ করবি না কি পুলিশ ডাকবো? আমি বলি এমন কাজ করবেন না প্লিজ। তখন ওরা বলে তাহলে ভালোই ভালোই টাকা আনার ব্যাবস্থা করেন। তখন আমি বলি এতো টাকা তো দেওয়ার মতো কেও নেই। তখন পরা বলে কতো পারবি? আমি ৫ হাজার এর কথা বললে আবার লাঠি উপরে তুললে আরেকজন ছেলে এসে ওর হাত থেকে লাঠি করে নিয়ে বলে তুই থাম। পুলিশকে কল দেই উনারা এসে নিয়ে যাক তার পরে যা পারে করুক। আমি তখন বলি প্লিজ এমন কাজ করবেন না দয়াকরে। তাহলে এই নে কল দে টাকা আন বিকাশে। আমি আমার এক ছোট ভাই কে কল দিয়ে ১৫ হাজার টাকা ধার নেই। ওরা বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে একজনকে পাঠায়। যাকে পাঠায় সে ৩০ মিনিট পরে কল দিয়ে বলে টাকা তুলেছে। তখন ওরা আমাকে শুধুমাত্র বাস বাড়া বাবদ ১০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে সোজা ঢাকার বাসে উঠে চলে যাবি। যাওয়ার সময় একদম পেছনে তাকাবি না। আমি চুপিসারে মেইন রাস্তায় এসে মেঘলা বাসে উঠে বাসায় চলে আসি।

আসার পরে এক মাস চুপচাপ থাকি। কথায় বলে না যে, চোরে শোনে না ধর্মের কথা। আর নেড়ে বারে বারে বেল তলায় যায়। আমিও এর বাহিরে নয়। এর মধ্যে নতুন মোবাইল এর ব্যাবস্থা হয়। আবারও এই আইডি’তে ঢুকে দেখি বেশ কিছু এসএমএস এসেছে। এর মধ্যে খুলনার একটা মেয়ে, গাজীপুরের একটা মেয়ে, নারায়নগঞ্জের বন্দর এর একটা মেয়ে এবং নারায়ণগঞ্জের চাষারার একটা মেয়ে। ওদের নিয়ে ঘটনাগুলো জানতে পারবেন অচিরেই।

চলমান……

আপনাদের ফিডব্যাক এর উপরে নির্ভর করবে আমার আগামী পর্বগুলোর প্রকাশ। এই পর্বটা ঈদের আগেই শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ঈদের ছুটির জন্য দৌড়ের উপরে থাকায় লেখাটা শেষ করতে পারি নাই। সময় বেশি লাগায় পাঠকদের কাছে আমি লজ্জিত। পরবর্তী পর্ব গুলো দ্রুতই আসবে।