মোবাইলে মেসজ টা আস্তে আমার মনযোগ ওখানে গেলো , মোবাইল টা আমার স্ত্রী বিদিশার। আমার পুরোনো মোাইলটা crash করে গেছিলো বলে স্ত্রীর কাছ থেকে ওর মোবাইল টা নিয়ে আমার নতুন কেনা মোবাইলে কিছু দরকারি নম্বর অ্যাড করছিলাম, ঠিক সেই মুহূর্তে ওই মেসেজ টা এলো। মেসেজ টা দেখে চক্ষু স্থির হয়ে খেলো, মেসেজ টা এসেছে একটা unknown number থেকে। মেসেজে লেখা ছিলো- ‘ বিদিশা সোনা আজকের জন্য তৈরী তো?…. আমার আর তোর সইছে না।‘
কে এরকম মেসেজ পাঠালো। নম্বর টা আমার নতুন মোবাইল এ save করলাম। কিছু দিন ধরে বিদিশা কে বেশ অন্যমনস্ক. দেখাচ্ছিলো, কিছু একটা যে ওর হয়েছে তা আমি আগে বুঝেছিলাম কিন্তু ভাবিনি এই সবের পিছনে কেউ থাকতে পারে। আজ বিদিশা সকালে বলেছিলো আমাকে ওর শরীর ভালো নেই, তাই ও অফিস যাবে না । বিদিশা কি কিছু লোকাচ্ছে আমার কাছ থেকে, এই কথাটা ভাবতেই বুকের ভেতর টা হিম হতে গেলো।
আবার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা মেসেজ এলো – ‘ ভুলে যেও না সোনা …যে শাড়ি টা তোমায় আজ পড়তে বলেছিলাম সেই শাড়ি টা পড়বে।‘
লোকটা র সাঠে যে বিদিশার কথা হয়েছে সেটা বুঝতে পারলাম। আমি ওই নাম্বারে পুরনো মেসেজ খুঁজতে লাগলাম কিন্তু কিছুই পেলাম না।
হঠাৎ আমাদের ছেলে রিক এসে দাড়ালো-‘ তোমার হলো বাবা। আমার স্কুলে দেরি হয়ে যাচ্ছ।‘
আমি বললাম – ‘ গাড়ি তে গিয়ে বস। আমি আসছি।‘
রিক চলে গেলে, মনে মনে ভাবলাম বিদিশা কে জিজ্ঞেস করি এই মেসেজ টার ব্যাপারে কিন্তু সাহস পেলাম না।
বিদিশা কি সত্যি আমায় cheat করতে পারে?
না এটা হতে পারে না। মন যেন মানছিল না।
হঠাৎ বিদিশার গলার আওয়াজ পেলাম – ‘ কি গো তুমি যাবে না… রিক তো নিচে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।‘
আমি তাড়াতাড়ি ফোন টা বন্ধ করে বিদিশার দিকে তাকিয়ে বললাম – ‘ হা আমার হয়ে গেছে। তোমার শরীর কেমন আছে এখন?’
বিদিশা খুব শান্ত ভাবে উত্তর দিলো- ‘ ওই একই রকম।‘
আমি ভালো ভাবে বিদিশা কে দেখলাম। গতানুগতিক জীবনের সাথে চলতে চলতে আমার নিজের স্ত্রী উপর নজর অনেকদিন ভালো ভাবে পড়েনি। বিদিশা যে উদাসী তা আমি খেয়াল করিনি। বড়ো বড়ো টানা চোখ দুটির মধ্য এক অদ্ভুত অসহয়তা দেখতে পেলাম।
আমি বিদিশা কে জিজ্ঞেস করলাম- ‘ তোমার কিছু হয়েছে?‘
বিদিশা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলার চেষ্টা করলো আর তারপর থেমে গিয়ে বললো-‘তোমায় বললাম তো শরীর টা ভালো নেই‘|
আমি কথা না বাড়িয়ে রিক কে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম গাড়ি করে। মনের ভেতর অস্থিরতা আমার বেড়ে যাচ্ছিলো। আমার সাথে বিদিশার দেখা হয়েছিলো যখন আমরা দুজনে পড়তে আসি UK তে। বিদিশা আমার থেকে জুনিওর ছিলো, আলাপ হয়েছিলো এখানকার দুর্গা পুজো তে । বিদিশা delhi তে বড় হয়েছে আর আমি কলকাতায়। প্রথম নজরে প্রেমে পড়ে গেছিলাম বিদিশার। বিদিশা প্রথমে আমার প্রতি কোনো interest সেই রকম ভাবে দেখাতো না, সেই সময়ে ওর Delhi te একজন boyfriend ছিলো কিন্তু পরে ওদের সম্পর্ক ভেঙে যেতে আমার সাথেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল।
ধীরে ধীরে সম্পর্কে র ঘনিষ্ট টা বাড়তে দুজনে নিজেদের পরিবারকে একে ওপরের ব্যাপারে জানালাম। তারপর বিয়ে এবং বিয়ের দুই বছরের মাথায় আমাদের সন্তান হয়ে। বিদিশা কে আগের বয়ফ্রেন্ড ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করাতে বিদিশা ব্যাপার টা এড়িয়ে যেতো তাই বিয়ের আগের ব্যাপারটা নিয়ে বেশি কিছু জিজ্ঞেস করতাম না। বিদিশার সাঠে প্রথম সঙ্গম করার সময়ে বুঝতে পেরেছিলাম বিদিশার সাঁথে সে রকম কিছু শারীরিক ঘটেনি ওর বোয়ফ্রেন্ড সাথে, কিন্তু আজ এক অদ্ভুত ভয় হচ্ছিলো। রিক কে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আমি সোজা অফিসে জানিয়ে দিলাম যে আমি আজ আস্তে পারবো না এবং গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা রওনা দিলাম বাড়ির দিকে।
গাড়িটা বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে পার্ক করলাম, বুঝতে পারছিলাম না ভেতরে যাবো কিনা আর ঠিক সেই উল্টো দিক থেকে একটা বড় SUV গাড়ি এসে থামতে দেখলাম।
গাড়িটা কার বুঝতে সময়ে লাগলো না।
জাভেদ সেইখ !
জাভেদ সাঠে আমাদের স্টোরে আলাপ হয়েছিলো প্রথমবার যখন আমি আর বিদিশা বাজার করছিলাম। রিক চিরকাল একটু দুষ্টু ছিলো, আমরা জিনিস নিতে এতো ব্যাস্ত হয়ে গেছিলাম কিছু মুহূর্তের জন্য নজর সরে গেছিলো রিকের উপর, সেই সুযোগে বদমাস্টা স্টোরে অন্য দিকে চলে গেছিলো। পরে আমাদের খেয়াল হলে রিক খুঁজতে লাগি, সেই সময় জাভেদ শেইখ রিক কে নিয়ে আসে আমাদের কাছে।
এরপর আলাপ হয় প্রথমবার জাভেদের সাথে।
শুধু জাভেদ না ওনার স্ত্রী রুবিনা ছিলো এবং ওদের তিনটি ছেলে | জাভেদ শেইখ সাথে মাঝে মধ্যে দেখা হতে শুরু হয় আমাদের বাজার করার সময়ে, জানতে পারি ওর এখানে একটা রেস্তোঁরা আছে, আমাদের আসতেও বলে। ওর রেস্তোরা তে একবার গিয়ে ছিলাম, বিদিশার পরিবেশটা ভালো লাগেনি বলে আমরা দ্বিতীয় বার ওখানে যাইনি।
মাঝে একবার বিদিশা কে বলতে শুনেছিলাম ওর gymn এ নাকি জাভেদ শেইখ আসা শুরু করেছে। ওকে মজা করে বলেছিলাম- ‘ এমনি তো পালোয়ানের মতো চেহারা, gymn এ গিয়ে আরো বড় পালোয়ান হবে নাকি।‘
বিদিশা মুচকি হেসে বলেছিলো – ‘Gymn এ সবাই যায়ে বডি ফিট রাখার জন্য , পালোয়ান হতে না, তোমার মতো বাড়িতে বসে ঘুমায় না… তুমিও তো পারো আস্তে আমার সাথে।‘
আমি সেদিন আরো কথা বাড়াই নি এই ব্যাপারে।
আমি আবার বাস্তবে ফিরে এলাম। মনে হলো জাভেদ শেইখ গাড়ির ভেতরে কারোর সাথে ফোনে কথা বলছে। কিছুক্ষন পর জাভেদ শেইখ নিজের SUV গাড়ি থেকে বেড়ালো। সোজা আমাদের বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলো জাভেদ। দরজার সামনে দাড়িয়ে রইলো এবং কিছুক্ষন পর আমার ঘরের দরজা খুলে গেলো। নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বিদিশা দরজা খুলে জাভেদকে ঘরে ঢোকালো। আমি নিজের গাড়ি থেকে সঙ্গে সঙ্গে বেড়িয়ে এলাম। নিজের বাড়ির দরজার কাছে গিয়ে চাবি দিয়ে দরজা খুলে ফেললাম।
আমি নিজের জুতো টা খুলে আসতে আসতে আমাদের ডাইনিং রুমে গেলাম।উকি মারতেই বিদিশা কে দেখতে পেলাম জাভেদের সাঠে কথা বলছে- ‘please জাভেদ… এরকম ভাবে তাকিয়ে থেকো না আমার দিকে…‘
বিদিশা দেখলাম নীল রঙের শাড়ি টে পড়েছে। মনে পড়ে গেলো এই শাড়িটা এবার পুজোতে পড়ে ছিলো। বিদিশা এরপরে তো কোনদিন এই শাড়ি পড়েনি, তাহলে জাভেদ কি করে এই শাড়ি তে দেখলো?
কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি উত্তর টা লাগলো।
জাভেদ-‘ ইনশাআল্লাহ… পুরো হুর লাগছে তোকে সোনা। ফেসুকের দেওয়া ছবির থেকে সুন্দর লাগছে তোকে।‘
এবার বুঝতে পারলাম জাভেদ বিদিশাকে ওই শাড়িতে Facebook e দেওয়া পোস্ট থেকে দেখেছে।
বিদিশা-‘ জাভেদ…তুমি যা বলেছো আমি তাই করেছি….এবার ভিডিও টা দিয়ে দাও আমায়।‘
বুঝতে পারলাম না কিসের ভিডিওর কথা বলছে বিদিশা। জাভেদ-‘ তোমার সাথে আমার কি কথা হয়েছে সোনা… সব দেবো তোমায় যদি তুমি আমার কথা শোনো।‘
বিদিশা-‘ তোমরা সবাই এক ধরনের… আমায় কথা দিয়েছিলে… এর পর আমার সাথে contact করবে না।‘
জাভেদ বিদিশার গালে হাত রেখে বললো- ‘ নেশা ধরে গেছে আমার… দোষ আমার না তোমার বিদিশা সোনা… এরকম মোমের মত শরীরের স্বাদ কোনো পুরুষ ভুলতে পারবে?‘
বিদিশা জাভেদের হাত টা নিজের গালের উপর থেকে সরিয়ে বললো-‘ আমি কি করে তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি তুমি পরে এই সব নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করবে না।‘
জাভেদ-‘ আমাকে বিশ্বাস করা ছাড়া কোনো উপায় নেই ।‘
আমি লুকিয়ে লুকিয়ে জাভেদ আর বিদিশার কথা গুলো শুনছিলাম, বুঝতে পারছিলাম না কি কারণে জাভেদ বিদিশা কে ব্ল্যাকমেইল করছিলো।জাভেদের সামনে বিদিশাকে একটা পুতুল মনে হচ্ছিলো, বিদিশা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চ লম্বা, রোগা ছিপ ছিপে শরীর আর অন্য দিকে জাভেদ ৬ ফুটের মতো লম্বা, পুরুষালি পালোয়ানের মত চেহারা। আমার মনে পড়ে গেলো বিদিশা আমাকে gymn না যাওয়া নিয়ে কথা শোনাতে শোনাতে বলে ফেলেছিলো- ‘ জাভেদ কে দেখে কিছু শেখো, এই বয়েশে নিজের শরীর প্রতি কত নজর… আর তুমি? …কি সুন্দর দেখতে ছিলে বিয়ের সময় আর এখন দেখো….‘
জাভেদ আবার বিদিশার কাধে হাত রাখলো আর গলায় আঙ্গুল বোলাতে বোলাতে বলল- ‘ বিদিশা সোনা… আমি kiতো তোমায় কথা দিয়েছি…আমার কথা শুনলে তোমার আর অর্জুনের সংসার ভাঙবো না।‘
জাভেদ আঙ্গুলের ছোঁয়া নিজের গলায় পড়তে, বিদিশা একটু কেপে উঠলো-‘ প্লিজ জাভেদ…তুমি তো আমায় বলেছিলে ভিডিও টা দিয়ে দেবে আর এইটা শেষ বারের মত হবে… আমি চাইলে সেই রাতের ব্যাপারের জন্য পুলিশের কাছে যেতে পারতাম…আমি করিনি…তোমার সংসার ভাঙতে চাইনি!l‘
জাভেদ হেসে বললো- ‘পুলিশের কাছে এখনো যেতে পারো সোনা… কিন্তু যে ভিডিও টা আমার কাছে আছে… সেখানে তো অন্য কিছু দেখাচ্ছে।‘
বিদিশা ফুপিয়ে উঠলো- ‘ আমার যে কি হয়েছিলো আমি নিজেও জানিনা।‘
জাভেদ-‘ ইসস কাদে না সোনা,,, আমি তো একটু আনন্দ করতে চাই…. এই নাও ভিডিও টা…এই পেন ড্রাইভে আছে।‘
কথাটি শেষ করে বিদিশার হাতে একটা জিনিষ তুলে দিলো জাভেদ। চোখের জল মুছে পেন ড্রাইভ ta হাতে নিলো বিদিশা আর তারপর জাভেদের দিকে তাকিয়ে বলল- ‘ আমি একবার দেখতে চাই…তুমি কি তুলেছো।‘