চিৎকার টা আর কেউ নয় বাপিই করেছে,সারা রাত কান্নার জন্যে চোখ ফুলে ব্যাথা হয়ে আছে তাই চোখ মেলে তাকাতে চাইছি কিন্তু পারছিনা, শেষে অনেক চেষ্টা করে চোখ মেললাম আর দেখি বাপি আমার দিকে তাকিয়ে কাদছে. আমি উঠে বসার চেষ্টা করি কিছুটা উঠেই আবার পড়ে যাই কারণ আমার কোমর এর নিচের দিকটাও ব্যাথা হয়ে আছে. আমার পড়ে যাওয়া দেখে বাপি আরও জোরে হাওমাও করে কেঁদে উঠে আর বলতে থাকে “এটা আমি কি করলাম, এই পাপ করার আগে ঈশ্বর আমায় মৃত্যু দিলো না কেনো. ঈশ্বর আমায় মৃত্যু দাও আমি বাচঁতে চাইনা আমায় মৃত্যু দাও মৃত্যু দাও”
বাপির কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো,,,কারণ আমি জানি উনার কোন দোষ নেই যা করেছেন জেনেশুনে করেননি, নেশার ঘোরে করেছেন. হঠাৎই বাপি ড্রেসিং টেবিলের কাছে গিয়ে ঘুসি দিয়ে আয়নাটা ভেংগে ফেললেন আর একটা ভাংগা আয়নার টুকরো হাতে নিলেন আর নিজের গলার কাছে নিলেন, কি হবে বুজতে পেরে আমি চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম
–তুমি এটা করোনা বাপি তোমাকে আমার দিব্যি, তুমি যদি একটা আঁচড়ও নিজেকে দেয়ার চেষ্টা করো তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে
—মামনি তোমার দিব্যি তুমি তুলে নাও,,,আমি আর বাচতে চাই না, আমাকে মরতে দাও আমাকে মরতে দাও(কেদে কেদে)
–বাপি তুমি সজ্ঞানে কিছু করনি আমি জানি,,,তুমি মরে গেলে আমার কি হবে বাপি আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, তুমি মরে গেলে নিজেকে তোমার মৃত্যুর জন্যে দায়ী ভাবতে ভাবতে আমিও যে মরে যাব, এর থেকে ভালো তুমি আমায় মেরে ফেলো,,,আমিযে তোমার মৃত্যু স্বচোক্ষে দেখতে পারবো না
বাপি হাত থেকে কাচটা ফেলে দিলেন আর বিছানার পাশথেকে চাদর নিয়ে আমাকে ঢেকে দিলেন আর আমায় জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলেন
—আমায় মাফ করে দাও মামনি,,,আমি তোমার অপরাধী আমায় মাফ করে দাও
–এক শর্তে মাফ করবো
—কি শর্ত বলো?আমি আমার জান দিয়ে হলেও আমার পাপের প্রাশ্চিত্ত করবো
–শর্ত হলো কখনো আত্বহত্যার চেষ্টা করবানা আর আর কখনো কোন দিন মদ খাবা না বা কোন নেশা করবা না
বাপি জবাবে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললেন, আর আমি একটা হাসি দিয়ে বললাম
–জানো বাপি আমি না একটা কথা জেনেছি
—কি কথা?
–তুমি মাম্মিকে পাগলের মত ভালোবাসো,,,আমার জন্যও একটা পাগল খুজে দাও না
—হুম দিবো,,,আমার প্রিন্সেসের জন্যে একটা প্রিন্স আনবো(বলেই আবার কাদতে লাগল)
–কেদোনা বাপি প্লিজ
—আমি একটা জানোয়ার, পশু মৃত্যুর শাস্তিও আমার জন্যে কম হয়ে যাবে
–এসব কথা বলোনা বাপি প্লিজ
—(কাদতে কাদতেই)নিজের কলিজার টুকরার উপর নিজেই এত অত্যাচার করেছি. নিজের মেয়েকে নিজেই অসতী করেছি. সবার কাছ হতে আগলে রেখেছি যাতে কেউ ক্ষতি করতে না পারে আর নিজেই কিনা এত বড় ক্ষতি করলাম
–বাপি এসব বোলো না আমি তোমায় আমার দোষী ভাবিনি. নিজেকে আর দোষ দিও না তাহলে আমিও নিজেকে মাফ করতে পারব না( একটু উঠতে চাইলে ব্যাথার কারনে আহ বলে পরে গেলাম)
বাপি এটা দেখে আরও বেশি করে কাদতে লাগলেন তারপর আমায় কোলে নিয়ে বাথটাবে শুইয়ে দিলেন আর পানির টেম্পারেচার দেখে কুসুম গরম পানি ছাড়লেন, পানি লাগায় কাটা জায়গায় শিনশিন করে ব্যাথা করে উঠলো মুখ বুজে ব্যাথাটা সহ্য করলাম তারপর বাপি চলেগেলেন আর কিছুক্ষণ পর সাথে করে ওষুধের বোতলের মত কয়েকটা বোতল আনলেন আর পানিতে ঢাললেন আর ওগুলো সরিয়ে রাখলেন আর আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন.
ধীরে ধীরে ব্যাথা কমতে থাকে তারপর আবারও চলে গেলেন আর সাথে করে ওষুধ আর খাবার আনলেন আর আমাকে খাইয়ে দিলেন এই কাজ গুলো করার সময় বাপি নিজের কান্না থামাননি অনবরত কাদতে কাদতে কাজগুলো করছিলেন , আধ ঘন্টা পর বাপি আমার কাপড় আর টাওয়াল রেখে গেলেন আর বলে গেলেন শরীর টা ভালো লাগলে জামাটা পরে নিতে. কিছুক্ষণ থাকার পর দেখলাম শরীরের ব্যাথা প্রায় সেরে গেছে আর শরীরে শক্তিও পাচ্ছি তাই উঠে গিয়ে শরীর মুছে ফেলে জামা পরে নিলাম.
———-নির্ঝর রায়ের point of view————
আমি ডাঃ নির্ঝর রায় ___ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান, আমি নিজের প্রফেশন অনুযায়ী একজন সফল ডাক্তার। আমার পরিবারের সদস্য তিন জন ছিল আমি, আমার স্ত্রী তৃষ্ণা আর আমার মেয়ে তিশা আর সেটা ১৫ বছর আগের কথা. আমার স্ত্রী ব্রেইন টিউমার এ আক্রান্ত হওয়ার কারনে মারা যায়, কিন্তু আমি তার এই মৃত্যুটা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারিনি কারন আমি তাকে প্রচন্ডরকম ভালবাসতাম. আমার আর তৃষ্ণার বিয়েটা ছিল প্রেমের বিয়ে যদিও পারিবারিক ভাবে হয়েছে, ওর আর আমার প্রেমের সুত্রপাত হয়েছে কলেজ লাইফ এ। ও আর আমি একি ক্লাস এ পড়তাম,আমরা দুজন ক্লাসমেট ছিলাম. ওর সাথে যখন আমার প্রথম দেখা হয় সেদিনই আমি ওর প্রেমে পড়ি. ওর টানা টানা চোখ, লম্বা কোমর সমান ওয়েভি চুল, নাক, চিবুক আর ওর ঠোঁটের নিচের তিল আমাকে ওর দিকে প্রবল ভাবে আকর্ষিত করে তাই প্রথম দর্শনেই ওর প্রেমে পড়ে যাই, ক্লাসএ সবসময় ওর দিকেই আমার নজরপড়ে থাকতো কিন্তু সামনে গিয়ে কথা বলার সাহস হত না, ওর সামনে গেলেই আর কথা বলতে পারতাম না.
একদিন হঠাৎ নিজেই আমার কাছে আসলো
–একটা কথা বলার ছিল
—(আমি ভেবাচেকা খেয়ে) হ,,হ্যাঁ বলো
–আসলে আমাকে যদি এই লেকচারটা বুঝিয়ে দিতেন
আমি সুন্দর করে বুঝিয়ে দিতে থাকলাম,,,বোঝানো হয়ে গেলে বললো
–থ্যাংকস,,,আসলে আমি এটা বুঝছিলাম না তাই আর কি
—না না এতে থ্যাংকস বলার কিছু নেই, এখন থেকে যা বুঝবা না তা আমার কাছে বুঝে নিও
কথার উত্তরে মিষ্টি করে একটা হাসি দিলো, সেটা দেখে আমার বুকের মদ্ধে ধাক্কা লাগে আর মনের মদ্ধে শিহরণ বয়ে যায়, আর আস্তে আস্তে আমাদের কথা বলাটাও শুরু হয়, প্রথম সেমিস্টার পরিক্ষার পর কিছু দিন ছুটি থাকায় ওর সাথে দেখা হয়নি, আগে এই ছুটির জন্যে পাগল হয়ে থাকতাম কিন্তু এই বারের ছুটির জন্যে প্রিন্সিপাল কে মনে মনে গালি দিতে লাগ্লাম কেন এতদিন ছুটি দিল,এক একটা দিন আমার কাছে বছরের মত লাগতো ছুটির দিন শেষ হতেই শান্তির নিশ্বাস ফেললাম আর ক্লাসএর দিন ই রেডি হয়ে বেরিয়ে গেলাম কলেজের উদ্দেশ্যে কখন আমার প্রিয়সি কে দেখব তা ভাবতে লাগ্লাম গিয়েই অপেক্ষা করতে লাগ্লাম তৃষ্ণার জন্যে.
কিছুক্ষন পরেই বেনি করা চুল আর কাধে ব্যাগ নিয়ে আমার সামনে আসলো আর মুচকি হাসি দিয়ে আমার পাশেই বসলো, এইভাবেই কিছু দিন কেটে গেল। পরিক্ষার রেসাল্ট দেয়ার পর দেখলাম আমি ফার্স্ট হয়েছি তাই খুব খুশি হলাম তার পর তৃষ্ণার নাম খুজলাম কিন্তু পাস করা স্টুডেন্টদের মদ্ধে পেলাম না তাই তৃষ্ণার কাছে গেলাম আমি যেতেই কাদতে লাগলো
—কেদোনা এইবার করনি ত পরের বার করবে
–আমি কি করবো কোন পড়াই আমার মাথায় ঢুকে না
—অসুবিধা নেই আমার কাছে এসো আমি বুঝিয়ে দিব
পরের দিন আমাকে এসে বললো
–আমাকে আমার বাসায় এসে পরাবেন?
—মানে?
–মা কে বলেছিলাম আপনার কথা উনি বলেছেন আমাকে বাসায় এসে পড়াতে।মানে আপনার কাছে টিউশন পড়ব
আমি যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম তাই তারাতারি ই রাজি হয়ে গেলাম, এক বাহানায় ওর সাথে দেখা হবে,,,তাই সপ্তাহের সাত দিনই ওর বাসায় যেতাম,,,এভাবেই আমার দিন গুলো পার হচ্ছিল
একদিন তারাতারি ছুটি হওয়ায় আমি আর তৃষ্ণা গল্প করতে করতে যাচ্ছিলাম হঠাৎই বৃষ্টি শুরু হয়েগেল আমি আর ও দৌড়ে বট গাছের নিচে দাড়ালাম অবশ্য দাড়াতে দাড়াতে দুজনি কাক ভেজা হয়ে গেছি তৃষ্ণা আমার সামনেই তার খোপা খুলে ওড়না দিয়ে চুল মুছতে লাগল আর ভিজে যাওয়ায় শরীরের সৌন্দর্য গুলো ফুটে উঠেছে আর অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে আছি, কেমন যেন এক ঘোরের মদ্ধে চলে গেলাম.
তৃষ্ণা আমার কাছে এসে আমায় ডাকতে লাগলো কিন্তু ওর কোন কথা আমার কানে আসলো না আমার দৃষ্টি ওর ভেজা ঠোঁটে নিবন্ধ হয়ে আছে আর ওর ঠোঁটের তিলটা আমাকে আকর্ষণ করছে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলাম না ওকে কাছে টেনে ওর ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলাম.
আমার কেমন যেন নেশাতে ধরে গেছে যেনো ওর ঠোঁটে নেশা কাটানোর ওষুধ আছে তাই ওর নরম ঠোঁটের স্বাদ নিয়ে নেশা কাটাচ্ছি ও আমাকে ধাক্কা দিলে আমি সরে যাই কিন্তু মাঝপথে থেমে যাওয়ায় আমি ওর কোমর জরিয়ে ধরে আবারও চুমু দিতে লাগলাম, ও আবারও আমায় ধাক্কা মারলো আমি সরে যাওয়ার সাথে সাথেই আমায় একটা চড় দিলো তাতে আমার হুশ ফিরলো তাকিয়ে দেখি তৃষ্ণা কান্না করছে আমি ওর কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে বললাম
—ভালবাসি তোমায়,,,বিয়ে করবে আমাকে?
জবাবে আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বৃষ্টির মদ্ধে দিয়েই ভিজে ভিজে চলে গেল। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম তাই ভিজে ভিজে বাসায় গেলাম আর গিয়েই রুমে এসে দরজা আটকে দিলাম আর ভাবতে লাগলাম তৃষ্ণাকে কি হারিয়ে ফেললাম, ওকে ছাড়া কিভাবে বাচবো,কি করবো,,,নিজের মাথার চুল গুলো নিজেই ছিড়তে লাগলাম.
বৃষ্টিতে ভেজার কারনে জ্বর আসে তাই ৩ দিন কলেজে যেতে পারিনি পরের দিন যাওয়ার পথে তৃষ্ণার সাথে দেখাহয়, তৃষ্ণা আমার সামনে এসে আমার হাত ধরে কোথাও নিয়ে যেতে লাগলো অনেক দূরে গাছের পাসে এসে দাড় করালো আর আচমকাই আমায় জড়িয়ে ধরলো আর বলল “ভালোবাসি”.
আমার দেহে যেন প্রান ফিরে পেলো আমিও তৃষ্ণাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরি ওর শরীরের নরম অঙ্গগুলো আমার শরীরের সাথে মিশে আছে, আমি ওর মুখ তুলে আবার ওর ঠোঁটের নেশায় মত্ত হলাম আর নিজের অজান্তেই আমার হাত ওর নরম নিতম্ব টিপতে লাগল আর তৃষ্ণাও আমার আদরে সাড়া দিচ্ছিল,,,কতক্ষণ এভাবে থাকলাম নিজেও জানি না ওকে ছেড়েদেই আর দুজনই হাপাতে থাকি এরপর ওর দিকে তাকালে দেখি ও লজ্জায় লাল হয়ে আছে, ওর গায়ের রঙ সুন্দর শ্যামলা হলেও ওর গালের লজ্জার আভাটা ঠিকই দেখতে পেলাম আর আমিও লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকাতে লাগলাম.
এর পর আমাদের প্রেম চলতে থাকে, তৃষ্ণার কাছথেকে জানতে পারি যে আমার কলেজে না আসার কারনে তৃষ্ণাও আমাকে মিস করছিলো আমারকে দেখার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ওঠেছিল তখন ও বুঝতে পারে যে ও আমাকে ভালবাসে. এর পর আমাদের মদ্ধে চুমু আর হাত ধরাধরি ছাড়া কিছুই হয়নি আসলে আমি সব কিছু বিয়ের জন্যে রেখেছিলাম, বিয়ে হোক তারপর সব জমিয়ে রাখা আদর দিব.
এরপর আমি ইন্টার পাশ করি ফার্স্ট ডিভিশনে আর তৃষ্ণাও পাস করে কিন্তু সেকেন্ড ডিভিশনে সে জন্যে আমার মন খারাপ
—তোমাকে ভাল করে পড়াতে পারিনি তার উপর প্রেম টেম করে তোমার মনোযোগ নষ্ট করে দিয়েছি তাই তোমার এই রেসাল্ট