তৃষা আর প্রতীক, দুজন দুজনকে ভালোবাসে তা আজ প্রায় দশ বছর হবে। স্কুল থেকে শুরু তাঁদের সম্পর্ক। প্রথম দিন ক্লাসে তৃষাকে দেখে প্রতীক থ হয়ে গেছিল। তৃষা তখন সবে যৌবনের দিকে পা বাড়িয়েছে। তার শরীর তখনও ভরন্ত হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তার শরীরে একটা আকর্ষণ রয়েছে, সেই আকর্ষণই প্রতীক আর তৃষাকে এক করে।
স্কুলের পর তারা একই কলেজে পড়াশোনা করে। কলেজেই তাঁদের প্রেমের হাত পা গজায়। ফাঁকা ক্লাসরুমে চুমু খাওয়া থেকে শুরু করে, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে দুজনে মিলে বেড়াতে চলে যাওয়া, আর হোটেলে এক ঘরে রাত কাটিয়ে নিজেদের এক করে তোলা। তাঁদের মধ্যে এ সমস্তটাই হয়েছে কলেজ জীবনে। এখন তারা দুজনেই মোটামুটি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে।
তৃষা একটা রিসেপশনে কাজ করে আর প্রতীক তার বাবার দোকান সামলায়। ফলে দুজনেই দুজনের বাড়িতে নিজেদের ব্যাপারে জানিয়েছে। দুজনের বাড়িতেই তাঁদের এই সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি নেই। তাঁদের এখন বাড়ি থেকে চাপ আসে বিয়েটা করে নেওয়ার জন্য। সব কিছু ঠিকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ তাঁদের মধ্যে শুরু হয় গোলমাল।
তৃষা যে অফিসে আছে, সেই অফিসেরই এক পুরুষ সহকর্মীকে নিয়ে ঝামেলাটা। প্রতীকের অভিযোগ, ছেলেটার সাথে তৃষা আজকাল বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অফিসের বিভিন্ন ছবিতে তাঁদের দুজনকে বেশ কাছাকাছি দেখা যায়, তৃষা আজকাল কথায় কথায় সেই ছেলেটার প্রশংসা করে, সব মিলিয়ে প্রতীকের কাছে বিষয়টা একটা সন্দেহজনক ব্যাপার।
কিন্তু তৃষার বক্তব্য, ছেলেটা ইতিমধ্যেই বিবাহিত আর তাঁরা শুধুমাত্র একে অপরের সহকর্মী, তাই প্রতীকের সন্দেহ করার কোনো মানেই নেই। কিন্তু সন্দেহপ্রবণ মন কি আর এসব কথা মানে? প্রতীকও পাল্টা তর্ক করে, ফলে দুইজনের মধ্যে একটা কলহের সৃষ্টি হয়েছে। আর প্রতিদিন সেটা একটু একটু করে বাড়ছে।
এদিকে তাঁদের এই ঝগড়ায় অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে তাঁদেরই এক স্কুলের বন্ধু, দেবলীনা। আসলে সবাই জানে, যে দেবলীনার, প্রতীককে ভালো লাগত, কিন্তু তার আর সে কথা প্রতীককে বলে ওঠা হয়নি। ফলে সে যখন প্রতীক আর তৃষার সম্পর্ক ভাঙার একটা মোক্ষম সুযোগ পেয়েছে, সেটা কি আর সে ছাড়বে?
দেবলীনা প্রতিনিয়ত প্রতীকের কান ভাঙ্গিয়ে চলে। অমুক দিন অমুক জায়গায় তৃষা আর সেই ছেলেটাকে একসাথে ফুচকা খেতে দেখেছে, থেকে তমুক দিন ফেসবুকে তাঁরা কতটা ক্লোজ হয়ে ছবি ছেড়েছে, এসব বলে সে প্রতীক আর তৃষার মধ্যে সম্পর্ক ভাঙার সমস্ত রকম চেষ্টা চালিয়ে যায়।
তৃষা বোঝে তাঁদের মধ্যে থাকা সম্পর্কটা এভাবে চলতে থাকলে ভেঙ্গে যাবে। তাই সে ঠিক করে, তাকেই সব কিছু আবার আগের মত করতে হবে। প্রতীক, সৌরভের উপর মিথ্যে সন্দেহ করছে। সৌরভের আদৌ তৃষাকে নিয়ে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই। আর এটাই প্রতীককে বুঝতে হবে।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। এক রবিবার সকালে সে পৌঁছে যায় প্রতীকদের বাড়িতে। প্রতীকের বাবা মাকে আগে থেকেই সব জানানো ছিল। তারা আগের দিনই দুজনে মিলে বেড়াতে চলে গেছেন কোথাও একটা। ফিরবেন দুই তিন দিন পর, তৃষার থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে। তাঁরা চাননা তাঁদের ছেলে মেয়ে দুটোর সম্পর্ক এভাবে ভেঙ্গে যাক। তাই তাঁদের সম্পর্ক ফের জোড়া লাগাতে তারা সব কিছুই করবেন।
প্রতীক এসবের কিছুই জানত না। বাড়িতে কেউ নেই তাই সেও আরামে ঘুমাচ্ছিল। তৃষার কাছে চাবি ছিল, সে সদর দরজা খুলে বাড়ির ভেতর ঢুকেই সোজা পৌঁছে যায় দোতলায় প্রতীকের ঘরের সামনে। ভাগ্য সহায়, ঘরের দরজা খোলাই ছিল। আলতো ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেল।
তৃষা দেখল তার প্রেমিক বিছানায় উল্টো হয়ে শুয়ে নাক ডাকছে। তৃষা চুপি চুপি ঘরে ঢুকে প্রতীকের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে। তারপর কিছুক্ষণ ঘুমন্ত প্রতীককে দেখে তার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চাপে। সে তার এক হাত প্রতীকের হাফ প্যান্টের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়। তারপরে প্রতীকের লিঙ্গ কচলাতে থাকে। স্বভাবতই লিঙ্গ নিজের পূর্ণাঙ্গ রূপ ধারণ করে। কিছুক্ষণ এভাবেই চলার পর প্রতীকের ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ খুলে হঠাৎ সামনেই তৃষাকে দেখে সে অবাক হয়ে যায়। তারপরেই ধড়মড় করে উঠে বসে। তার হাব ভাব দেখে তৃষাও হাসতে হাসতে উঠে বসে। তারপরে প্রতীকের কাছে এগিয়ে গিয়ে তার গলা দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে, “ঘুম ভাঙল আমার বাবুর?”
“কে তোর বাবু?” প্রতীক রেগে জবাব দেয়। তারপরে পাল্টা প্রশ্ন করে, “তুই বাড়িতে ঢুকলি কীভাবে?”
“আমার উপরে রাগ করে আছিস?” তৃষা প্রতীকের প্রশ্নের ধার দিয়েও যায়না।
প্রতীক কোনো উত্তর না দিয়ে বিছানা থেকে নেমে যায়। তারপর সে বাথরুমের দিকে পা বাড়ালে, তৃষাও তার পিছু পিছু বাথরুমে ঢুকে যায়।
“আমি এখানে হাগতে ঢুকেছি তো?” প্রতীক রীতিমত বিরক্ত।
“তো হাগ! আমি কি তোকে আটকাচ্ছি?” তৃষা ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর দেয়।
প্রতীক বোঝে এ মেয়ে বেরোবে না। সেও প্যান্ট নামিয়ে কমোডের উপর বসে পড়ে। সে বাইরে থেকে রাগ দেখালেও স্বাভাবিক ভাবেই তারও মজা লাগছিল। আর তৃষাও তা জানে। আর তাই সে বাথরুমের আয়নায় পুরো সময়টা ধরে নিজের চুল, মুখ ঠিক করার নাটক করতে থাকল।
কাজ শেষ করে প্রতীক এবার ব্রাশ করতে যায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে মুখ ব্রাশ করছে, আর তার পাশে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে তৃষা। মুখে এক চিলতে হাসি। দাঁত ব্রাশ করতে করতে অতি কষ্টে নিজেকে সামলে রাখে প্রতীক। সে কোনোভাবেই চায়না তৃষার মুখের দিকে দেখতে। সে জানে তৃষার ওই মুখ দেখলেই সে হেসে ফেলবে। কোনমতে নিজেকে সামলে সে মুখ ধুয়ে বাথরুম থেকে বেরোয়।
নীচে নেমে সে কফি তৈরি করে। সে এককাপ কফি করছে দেখে তৃষা পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আমার জন্য বানাবি না? আমি সকাল থেকে কিচ্ছু খায়নি। সোজা তোর কাছে চলে এসেছি।”
প্রতীক এবার বাধ্য হয় আরেক কাপ কফি বানাতে। তার এই পরিবর্তন দেখে তৃষা মনে মনে খুশি হয়। সে বোঝে বরফ প্রায় গলেই এসেছে।
এইভাবেই দুপুর পর্যন্ত প্রতীককে নানা রকম ভাবে তৃষা বিরক্ত করে চলে। একসময় বিরক্ত হয়ে প্রতীক ভাবে গাড়িটা বের করে সে দোকানে চলে যাবে। কিন্তু পরক্ষণেই তার মনে হয়, সে কোথাও গেলে তৃষাও তার পিছন পিছন যাবে। আর দোকানের কর্মচারীদের সামনে তৃষা যাবে, এটা ভালো হবে না। বাবা জানলে খুব রেগে যাবে।
দুপুরে স্নান করার সময় আরেক কাণ্ড। প্রতীক বাথরুমে ঢুকে সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করার আগেই তৃষা এক হাত বাড়িয়ে দেয়। ব্যাস! হাতে দরজার চাপ লেগে গেল। তারপর সে কি চিৎকার! যতটা লেগেছে তার থেকে একশো গুণ জোরে চিৎকার করছে তৃষা। বাথরুম থেকে বেরিয়েই তৃষার হাতে ব্যথা কমানোর মলম লাগিয়ে দেয় প্রতীক।
যখন সে সোফায় বসিয়ে তৃষার হাতে মলম ডলছে, তখন তৃষা সুযোগ বুঝে ঘাড় কাত করে প্রতীকের মুখের মধ্যে তার মুখ ডুবিয়ে দিতে চায়। কিন্তু সতর্ক প্রতীক সঙ্গে সঙ্গে সরে যায়। ব্যর্থ তৃষা বসে থাকে, প্রতীক স্নান সেরে আসে।
দুপুরে খাবার অর্ডার করে আনে প্রতীক। না চাইতেও দুজনের খাবার আনাতে হয়। খাওয়া হয়ে গেলে, প্রতীক বাসন গুলো রান্নাঘরের বেসিনে ধুচ্ছিল এমন সময় তৃষা বসার ঘর থেকে চিৎকার করে ওঠে, “খাঙ্কি মাগী!”
ব্যাপার কী দেখার জন্য বাসন ছেড়ে বসার ঘরে আসতেই প্রতীক অবাক হয়। তার মোবাইল তৃষার হাতে। আর তৃষা সেটা স্ক্রল করে চলেছে। সারাদিন ধরে ইয়ার্কি করতে থাকা তৃষা এখন প্রচন্ড রেগে।
“আমার ফোন নিয়ে তুই কী করছিস?” প্রতীক বিষয়টা জানতে চায়।
“তার আগে তুই বল ওই খানকিটার সাথে তুই এত কথা কেন বলিস? অ্যাফেয়ার মারাচ্ছো? প্রেম একদম গাঁড়ে গুঁজে দেব সালা বোকাচোদা।” তৃষা হাতের ফোনটা দেখিয়ে রাগে ফেটে পড়ে।
“মুখ সামলে কথা বল। কীসব বলছিস?”
“কী বলছি বুঝতে পারছিস না? এই দেবলীনা মাগীটা তোকে এত মেসেজ করে কেন? আর আমার এই ছবিগুলো ও কোথায় পেল?” তৃষার প্রশ্নবাণ ধেয়ে যায় প্রতীকের দিকে।
“কেন রে, ও তোর আর তোর নাগরের ছবিগুলো পাঠায় দেখে রাগ হচ্ছে? তোরা তো রিলেশনে নেই তাহলে সমস্যা কোথায়?” পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় প্রতীক।
“প্রতীক ব্যাপারটা তুই যা ভাবছিস তা নয় আমি তোকে আগেও বারবার বলেছি, আবার বলছি, আমি আর সৌরভ শুধু কলিগ, আর কিছু না। বেকার সন্দেহ করিস না। কিন্তু আমার এই ছবিগুলো ও কোথায় পেল?” তৃষা শান্ত হওয়ার চেষ্টা করে।
“তোরা যদি শুধু বন্ধুই হোস তবে এমন ছবি ওঠে কীভাবে? এত কাছাকাছি? এমন ছবি তো শুধু বন্ধু হলে তোলা যায় না!”
“সেটাই তো বলছি। এই ছবিগুলো ফেক।”
“ফেক? এই ছবিগুলো ফেক?” প্রতীকের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। সত্যিই তো এই দিকটা সে ভেবেই দেখেনি।
তৃষার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে সে খুঁটিয়ে দেখতে যায়। কিন্তু তেমন কিছু সে বুঝতে পারেনা।
“কই আমার তো এটা নকল বা এ আই দিয়ে তৈরি মনেই হচ্ছে না।” প্রতীক দ্বিধাগ্রস্ত।
“দাঁড়া তো দেখি।” তৃষা নিজের ফোন বের করে এনে গ্যালারি খুঁজতে থাকে। কিছুক্ষণ পরেই সে প্রতীককে হুবহু একই রকম একটা ছবি দেখায়। এই ছবিতে সৌরভ আর তৃষা দুজনে রয়েছে ঠিকই কিন্তু আগেরটার মত অত কাছাকাছি, আপত্তিকর অবস্থায় নয়। বরং তারা সত্যিই বন্ধুর মত দাঁড়িয়ে রয়েছে।
প্রতীক দুটো ছবিই ভালো করে দেখে। সে আরও বেশি হতবাক হয়। “কোনটা আসল বুঝবো কীভাবে?”
“আমার ফোনে যে ছবিটা আছে সেটা ক্যামেরা ফোল্ডারে আছে। কোনো ডাউনলোড ফোল্ডারে নেই। মানে কোথাও থেকে ডাউনলোড করা না।” একটু থেমে সে বললো, “দেখি তো।”
সে আবার তার ফোনটা নেয়। এবার সে একটা জনপ্রিয় এ আই ওয়েবসাইটে ঢোকে (https://banglachotioriginals.in/ সেরা চটি গল্প)। এই ওয়েবসাইটে আজকাল একদমই বিনামূল্যে নানা রকম এ আই দিয়ে তৈরি ছবি বানানো যায়, যা একদমই বাস্তবের মত হয়। এই ওয়েবসাইটে সে তার ফোনের ছবিটা আপলোড করে একটা নির্দেশ লিখে দেয়। আর তার কিছুক্ষণ পরেই দেবলীনার পাঠানো ছবির মতোই চারটে ছবি তৈরি হয়ে যায়। প্রতিটা ছবিই একদম আসলের মত। তৃষা ছবিগুলো ডাউনলোড করলে, ওগুলো ডাউনলোড ফোল্ডারে সেভ হয়ে যায়।
পুরো ব্যাপার দেখে প্রতীক হতভম্ব হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পরে সে যেন সম্বিৎ ফিরে পায়, “আচ্ছা ধরে নিলাম ছবিগুলো নকল। কিন্তু এই ছবিগুলো বানাতে হলেও তো আসল ছবিগুলোর দরকার। সেগুলো ও কোথা থেকে পাচ্ছে? তুই তো আর ওকে দিচ্ছিস না। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এগুলো আপলোড করিসনি, তাহলে?”
“হুম তাই তো আমিও ভাবছি!” তৃষাও চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
কিছুক্ষণ ভাবার পরে তৃষা যেন উত্তর খুঁজে পেয়েছে।
“দেখ আমি যা ভাবছি তাতে হয়তো তোর কথাই ঠিক।”
প্রতীক অবাক, “মানে?”
তৃষা কিছুক্ষণ প্রতীকের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর ধীরে ধীরে বলে, “মানে আমি বলতে চাইছি যে… সৌরভ হয়তো আমাকে পছন্দ করে। ও হয়তো চায় না আমি তোর সাথে থাকি। ঠিক যেমন দেবলীনা তোকে চায়, তেমন।” একটু থেমে আবার বলে, “কিন্তু বিশ্বাস কর, আমি তোকে ছাড়া আর কাউকে পছন্দ করি না।” এবার তৃষা একদম নরম।
প্রতীক কিছুক্ষণ ভেবে পায় না কী বলবে। তারপর সে বলে, “তোর এমন মনে হচ্ছে কেন?”
“এই ওয়েবসাইটের কথা আমাকে প্রথম সৌরভই বলে। ও দেখতাম এই ওয়েবসাইটে ছবি বানিয়েই যেত। আর আমাদের ছবিগুলো আমার ফোনের পাশাপাশি একমাত্র ওর ফোনেই থাকার কথা। ওর পক্ষে এমন নকল ছবি বানানো খুবই সহজ। তাই আমার মনে হল।”
“কিন্তু তাহলে তো বলতে হয় ওর সাথে দেবলীনার যোগাযোগ আছে। ও ছবিগুলো বানিয়ে দেবলীনাকে দিয়েছে আর দেবলীনা আমাকে সেগুলো পাঠিয়ে ব্রেন ওয়াশ করেছে।”
“এটা ছাড়া আর কিছু তো মাথায় আসছে না। আর এটা প্রমাণ করার একটাই রাস্তা আছে।”
“কী?”
“সৌরভ আর দেবলীনাকে প্রশ্ন করে।”
কথাটা শুনে প্রতীক আর দাঁড়াতে চায় না। সে সঙ্গে সঙ্গে রেডি হয়ে তৃষাকে নিয়ে গাড়ি করে বেরিয়ে পরে। দেখা করার জন্য একটা ক্যাফেতে সৌরভ আর দেবলীনাকে ডেকে নেয় দুজনে। তারপর দুজনে আসতেই কায়দা করে তৃষা ফোন করার অছিলায় সৌরভের ফোন চেয়ে নেয়। তারপর দেবলীনার নাম্বার টিপতেই দেখে নাম্বারটা দেব বর্মন নামে সেভ করা। খাঙ্কির ছেলে!
ওদিকে একটু দূরের টেবিলে বসে থাকা প্রতীক এই টেবিলের ঘটনা দেখে একই রকম কায়দায় দেবলীনার ফোন চেয়ে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তৃষা সৌরভের ফোন থেকে দেবলীনার ফোনে কল করে। প্রতীক কলার আইডিতে নাম দেখে, সৌরভ। খাঙ্কি মাগী!
ব্যাস তারপর আর কী! দুজনে মিলে দেবলীনা আর সৌরভের সাথে যা করে তা আর কহতব্য নয়। তৃষা, দেবলীনার চুল টেনে ছিঁড়ে একাকার করে দিয়েছে। দেবলীনার সারা শরীরে আঁচড়ের দাগ। ওদিকে সৌরভের অবস্থাও প্রতীক কাহিল করে দেয়। তাঁদের মারধরের চোটে দুজনেই সব স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়। তারা জানায় তারা আসলে পূর্ব পরিচিত এবং নিজেদের পছন্দের মানুষদের পাওয়ার জন্যই তারা এই কাজ করেছে। ক্যাফের কর্মীদের এই চারজনকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
দেবলীনা আর সৌরভ এরপরে পালিয়ে যায়। প্রতীক আর তৃষা হাঁফাতে হাঁফাতে গাড়িতে ওঠে। কিছুক্ষণ গাড়ি চালানোর পর তৃষা বলে, “সালা শুয়োরটাকে আমি বন্ধু ভেবেছিলাম, মালটার বউ আছে তারপরও!” তারপরই প্রতীকের দিকে ঘুরে শাসানির সুরে বলে, “সালা আমাকে ছেড়ে যদি কোনোদিন অন্য কারো দিকে তাকিয়েছিস, একদম পুঁতে রেখে দেব।”
প্রতীক হাসতে হাসতে বলে, “তোকে ছাড়া আর কার দিকে তাকাবো?”
কিছুক্ষণ দুজনেই চুপচাপ। তারপর তৃষাই নীরবতা ভাঙ্গে।
“ওহ অনেক কিছু হয়ে গেল। ভীষন উত্তেজিত হয়ে গেছিলাম। চল মদ খাই।”
প্রতীকও এতে সায় দিল। গাড়ি এগিয়ে চলল পানশালার দিকে। বিকেল গড়িয়ে এখন সন্ধ্যে। পাখিরা সব ঘরে ফিরছে। তৃষা আর প্রতীক এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও তারা বুঝতে পারল না, একটু আগে তারা যা করল আজ তার থেকেও বড় কিছু কর্মা হয়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে।
রাত দেড়টা। গোটা সন্ধ্যে আর রাত জুড়ে মদ পান করে, নেচে, গেয়ে কখন যে রাত এত গভীর হয়ে গেল, প্রতীক, তৃষা কেউই বলতে পারবে না। দুজনেই চরম নেশা করেছে। পা রীতিমত টলছে তাদের। এই অবস্থায় তাদের বাড়ি ফেরা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু বাড়ি তো যেতে হবেই। কোনমতে ড্রাইভিং সিটে উঠে বসল প্রতীক। তার পাশে এসে বসল তৃষা। গাড়ি এগোল। আজ একটা দুর্ঘটনা ঘটবেই। কিন্তু সেটা কি গাড়ির হবে?
প্রতীক গাড়ি চালাচ্ছে ঠিকই কিন্তু তার রাস্তার কোনো হুশ নেই। রাস্তা সে গুলিয়ে ফেলেছে। ভাগ্যিস রাস্তায় এখন গাড়ির সংখ্যা কম। তৃষা নিজের সিটে ঝিমোচ্ছে।
হঠাৎ তৃষা মাথা তুলে হেসে উঠলো। রীতিমত মাতালের হাসি। “আজকে দুটো… কে যা মেরেছি… হা হা… সারাজীবন মনে রাখবে।” তার এই কথায় প্রতীকও হাসে। অযথা হর্ন বাজাতে বাজাতে হাসে।
কিছুক্ষণ আবার চুপ চাপ। তারপর তৃষা প্রতীকের একটা হাত নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলে, “সরি রে বাবু। তুই আমাকে ওর থেকে দূরে থাকতে বলেছিলি, আমি শুনিনি। আমি দোষ করেছি। তুই আমাকে মার।” এই বলে প্রতীকের হাতটা দিয়ে সে নিজের গালে চড় মারতে থাকে।
প্রতীক নিজের হাত টেনে নেয়। “নাহ আমি তো ঐ খাঙ্কির কথা শুনে তোকে সন্দেহ করেছি। দোষ আমার। তুই আমাকে মার।”
“না দোষ আমি করেছি। আমাকে শাস্তি দে।”
“না আমি বললাম তো আমি তোকে সন্দেহ করেছিলাম দোষ আমার।”
দুই মাতালের মধ্যে এসব মাতলামি চলছে, আর ওদিকে গাড়ি কখন জানি বড় রাস্তা ছেড়ে ঢুকে গেছে পাশের রাস্তায় আর চলছে তার মধ্যে থেকেই। একটু পর আরোও গলির মধ্যে ঢুকে পরে তারা। কিন্তু দুই মাতালের এই দিকে কোনো খেয়ালই নেই।
একটু পর নিজেদের মধ্যে তর্ক করতে করতে হঠাৎ ব্রেক কষে প্রতীক। “আচ্ছা আমরা দুজনেই দোষ করেছি, শাস্তি দুজনেরই হবে।” কোনোরকমে জড়িয়ে জড়িয়ে কথাটা বলে সে।
“হুম ঠিক। আমাকে আগে শাস্তি দে।” তৃষা সিটে সোজা হয়ে বসে।
“কী শাস্তি দেওয়া যায়। কী শাস্তি দেওয়া যায়।” বলতে বলতে প্রতীক বাইরের দিকে তাকায়। এটা যে তাঁরা কোথায় এসে পড়েছে, জ্ঞান থাকা অবস্থাতেও সে বলতে পারবে না। আশে পাশে তেমন বাড়ি ঘর নেই। রাস্তা পাকা হলেও চারিদিকে বেশিরভাগটাই জলাশয়। পানা পুকুর সব। আর তাদের গাড়ির ঠিক ডান দিকে একটা টিনের ঘর মত আছে। ভিতরে এই রাতেও একটা আলো জ্বলছে। সেই দিকে তাকাতেই প্রতীকের মাতাল মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এল।
“ঐ যে ঘরটা দেখছিস, ওর সামনে গিয়ে জামা খুলে তোর ব্রেস্ট দেখিয়ে আয়।”
প্রতীকের এই কথা শুনে কোনো সেন্সে থাকা মেয়ে অন্তত একবার ভাবত। কিন্তু মাতাল তৃষা ব্যাপারটার গুরুত্ব একবারের জন্যও ভেবে দেখল না। এই ফাঁকা জায়গায় এত রাতে যে এমন কিছু করাটা বিপদজনক হতে পারে সে সেটা সেকেন্ডের জন্যও ভাবল না।
তৃষা হেসে বলল, “এই ব্যাপার! এখনি যাচ্ছি।”
বলার সঙ্গে সঙ্গে সে বাম দিকের গাড়ির দরজা খুলে নেমে পড়ল। মদের নেশায় সে ঠিক মত হাঁটতে পর্যন্ত পারছে না, কিন্তু সে এগিয়ে চলল ডান দিকের ওই টিনের ঘরের দিকে। আর প্রতীক গাড়িতে বসে মজা দেখতে লাগল।
তৃষা এগোল। টিনের ঘরটার কাছে পৌঁছে সে একবার পিছনে তাকাল। তারপর প্রতীকের দিকে তাকিয়ে হাসল। ফের ঘরের দিকে ফিরে তার জামার বোতাম খুলতে শুরু করল। একটা, দুটো, তিনটে, চারটে বোতাম খুলতেই তার পেট সমেত বুক বেরিয়ে পড়ল। এখন তার বুকের আবরণী শুধু গোলাপী ব্রাখানা।
আবার সে খিল খিল করে হাসতে হাসতে প্রতীকের দিকে ফিরল। তখনই সে বুঝতে পারল না, ঘরের দরজা একটু ফাঁকা হয়েছে। তারপর আবার ঘরের দিকে ফিরে সে যখন তার ব্রা টেনে উপরের দিকে তুলে তার ফর্সা, সুন্দর গোপন বক্ষ এই গভীর রাতে টিনের ঘরের কাছে উন্মুক্ত করল, সে বুঝল না কফিনের শেষ পেরেক সে পুঁতে ফেলল।
কিছুক্ষণ ওভাবেই মেলে ধরে রাখার পর, খিল খিল করে হাসতে হাসতে, আবারও যখন সে পিছনে প্রতীকের দিকে ফিরল, তখনই ঘরের দরজাটা হাট করে খুলে গেল, আর একটা দেহ বাইরে বেরিয়ে এসে ক্ষিপ্র হস্তে তাকে ধরে একেবারে টানতে টানতে ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে গায়েব হয়ে গেল। আর দরজাটা আবারও বন্ধ হয়ে গেল।
ঘটনাটা এত দ্রুত ঘটল যে মাতাল প্রতীক আর তৃষা কিছু বুঝে উঠতেই পারলনা। কী ঘটল ব্যাপারটা? প্রতীক শুধু দেখল তৃষাকে কেউ টানতে টানতে ঘরের ভিতর নিয়ে গেল। কিন্তু কে ছিল সে জানে না। প্রতীক কিছু বুঝতে পারছে না সে কী করবে! তার মাথা কাজ করছে না।