Site icon Bangla Choti Kahini

এক সাহিত্যিকের রঙিন জীবন- প্রথম পর্ব

নন্দিনী সেন একজন নামী লেখিকা। বয়স ৩৭+, এত কম বয়সে এত ফ্রেম কোনো লেখিকা তো দূর অস্ত লেখক বা কবির কপালে জোটে নি। তিনি মূলত প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য লিখে থাকেন। তার লেখায় অবাধ যৌনতা, পার্টি নাইট club, নেশা , multiple affair ইত্যাদি আধুনিক সামাজিক উপকরণ মজুত থাকলেও নন্দিনী সেন নিজে এসব থেকে শত হস্ত দূরে থাকতে পছন্দ করেন।

তিনি লিখে নাম আর টাকা দুটো করলেও, আজ অবধি প্রেস মিডিয়ার সামনে নিজেকে নিয়ে আসতে পারেন নি। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে লিখলেও তিনি আজও নিজেকে সবার সামনে নিয়ে আসতে অপারগ। শহরে তার অনুরাগী পাঠককুল সবাই তার নাম শুনলেও , তার আসল চেহারা সম্পর্কে একেবারে পরিচিত নয়। তার হাতে গোনা কয়েক জন পাবলিশার্স আর পত্রিকার সম্পাদক বন্ধুরা তার আসল চেহারা টা শুধু চেনে।

তিনি তার লেখক ক্যারিয়ার এ সফল হলেও মানষিক দিক থেকে শান্তি পান নি। বরংচ শেষ এক বছর তিনি তার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স কেস নিয়ে টানাপোড়েনে জড়িয়ে এক মানষিক অস্থিরতা টে তড়পে তড়পে করেছেন। দেড় মাস আগে আদালত ডিভোর্স কেস এর রায় দিয়েছে। সেখানে তার হার হোয়েছে। নন্দিনী তার নয় বছরের মেয়ে পিকুর custody হারিয়েছেন।

আদালত মাসে মাত্র দুটি বার তাকে মেয়ের সঙ্গে দেখা করে সময় কাটানোর অধিকার দিয়েছে। এই রায় তাকে খুশি করতে পারে নি, কিন্তু এই রায় তার মেনে নেয়া ছাড়া উপায় ও ছিল না। কিন্তু এই আইনি লড়াই হেরে তার মনের অস্থিরতা দশ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই শেষ দেড় মাস থেকে মানষিক অবসাদে ভুগে তিনি এক লাইন লেখা লিখে উঠতে পারেন নি।

শেষে আরো সপ্তাহ খানেক পর, স্বয়ংসম্পূর্ণা পত্রিকার সম্পাদক মিস জুন ভট্টাচার্য( বয়স ৪৮) তাকে তার পত্রিকার অফিসে ডেকে পাঠাতে বাধ্য হলেন। উনি নন্দিনীর একজন শুভানুধ্যায়ী , সেই সাথে নন্দিনীর ভালো একজন বন্ধু। তার carrier ER শুরুর দিন থেকে নন্দিনী সেন কে গাইড আর ব্যাক করে তিনি তাকে সাফল্যের মধ্যগগনে পৌঁছে দিয়েছেন। তার উপদেশে নন্দিনী প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য লেখা লিখতে শুরু করেছিল। তাই নন্দিনী জুন দির কোনো কথা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারে না।

নন্দিনী সেন জুন ভট্টাচার্যর কেবিনে ঢুকতেই, জুন দেবী বলে উঠলো,
” কি ব্যাপার নন্দিনী? পুজোর লেখার প্রথম ড্রাফট এখনও জমা দিলে না। আর তো সময় নেই বেশি। শুধু আমাদের না। আমি খবর পেয়েছি, পুজোয় আরো যে চারটে জায়গায় তোর লেখা ছাপা হয় তাদেরও এখন ও কিছু দিস নি। What’s your problem??”

নন্দিনী জুন ভট্টাচার্যর টেবিল এর সামনে রাখা একটা চেয়ারে বসে জুন দেবীর মুখের দিকে তাকিয়ে খুব করুন স্বরে বলল,
” আমি বোধ হয় আর লিখতে পারবো না জুন দি। শেষ দেড় মাস ধরে অনেক চেষ্টা করলাম। কিছুতেই মনঃসংযোগ করতে পারছি না।অনেক কিছু চেষ্টা করছি, কোনো কিছুতেই কিছু কাজ হচ্ছে না।”

নন্দিনীর কথা শুনে জুন হাসলেন। তারপর বললো, “তুই সাকসেস পেলেও তোর মধ্যবিত্ত মানসিকতা থেকে এখনও বেরোতে পারিস নি। তাই ডিভোর্স টা নিয়ে এখনও এত ভাবছিস। যা হয়েছে বেশ হোয়েছে। একটা মরে যাওয়া সম্পর্ক জিয়ে রাখার থেকে, এই ভালো । দায়িত্ব হীন স্বাধীন জীবন উপভোগ কর। আস্তে আস্তে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। অতীত কে ফেলে তোকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কি এমন বয়স্ তোর, এখনও তোর জীবন এ অনেক পুরুষ আসবে যাবে। এখন একটা জমিয়ে প্রেম কর। দেখবি অর্ধেক সমস্যা ঠিক হয়ে গেছে। কিরে দেখবো তোর জন্য ছেলে।।

নন্দিনী: আর মজা করো না জুন দি। সেরিয়াসলী কিছু ভালো লাগছে না।
জুন: আমি মজা করছি না। কতদিন আগে শেষ বার শুয়েছিস?

নন্দিনী এই প্রশ্ন শুনে চুপ করে গেলো, কোনো উত্তর দিতে পারলো না। জুন ভট্টাচার্য তাই দেখে বলল, ” তোর মুখ দেখে বুঝতে পারছি, সুদূর অতীত, হু হ্ন ঠিক ভেবেছি। তোর একটা ব্রেক দরকার। তুই এক কাজ কর আমার সঙ্গে উইক এন্ড ট্রিপে পরশু লোধাসুলি চল। খুব মজা হবে।

নন্দিনী: আমিও কোথাও একটা বেড়াতে যাবো ভাবছিলাম, আইডিয়া টা দারুন কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে গেলে তোমার প্রাইভেসি ডিস্টার্ব হবে না ত? যতদূর চিনি তোমাকে,
তুমি নিচ্ছয় শুধু ব্রেক নিতে যাচ্ছো না। আমি নিচ্ছিত সঙ্গে তোমার বর্তমান পুরুষ বন্ধু ও যাবে।

জুন: “উহু, পুরুষ বন্ধু না, fling বলতে পারিস। পার্মানেন্ট সম্পর্কে আমার আর কোনো ইন্টারেস্ট নেই। ওকে রেখেছি মস্তি করবো বলে। এই আদিত্য রয় পুরো আমার হাতে তৈরি। দেখতে হান্ডসম, বেশ পয়সা ওলা ঘরের ছেলে। আমাদের মধ্যে জাস্ট দেওয়া নেওয়ার সম্পর্ক। বুঝলি??”

নন্দিনী অবাক হয়ে জুন এর দিকে তাকালো। তারপর ব্যাগ থেকে একটা সিগারেট এর প্যাকেট বার করে একটা সিগারেট বার করে ঠোঁটে রাখলো। জুন কেও অফার করলো । জুন নিজের লাইটার দিয়ে নন্দিনীর সিগারেট ধরিয়ে দিল তারপর নিজের তাও আগুন দিল।

এক রাশ ধোওয়া ছেড়ে জুন বললো,
তুই আসলে আমার সমস্যা নেই। বরং আমার ভালোই লাগবে। চাইলে তোর জন্য ও একটা সারপ্রাইজ এর ব্যাবস্থা করতে পারি।
নন্দিনী: কি সারপ্রাইজ?
জুন: সেটা এখন বলা যাবে না। পাব এ গিয়ে আমাকে কোম্পানি দিলে আমি প্ল্যান টা করতে পারি।
নন্দিনী: তুমি জানো, আমি ড্রিংক করি না। আমার ভালো লাগে না।

জুন: ইয়েস আমি জানি, তুই খাস না। কিন্তু এই সময় একটু অ্যালকোহল না খেলে মনে হয় না তুই লিখতে পারবি।
নন্দিনী: চলি আজ উঠি।

জুন: এখন ই উঠবি। লাঞ্চ করে যা। তাহলে বল, লোধাসুলি টা কনফার্ম তো। আমি কিন্তু গাড়ি নিয়ে ভোরবেলা তোকে পিক আপ করতে চলে আসছি।নন্দিনী: অন্য একদিন লাঞ্চ করবো তোমার সাথে বসে। আজকে উঠি। আজকে তোমাদের লেখা টা শেষ করেই ফেলব বুঝলে। আর তুমি যখন এত করে বলছো। আমি যাবো।
জুন: গ্রেট!!

তাহলে শোন, আমরা দিন তিনেকের জন্য যাচ্ছি। সঙ্গে বেশি ড্রেস নেবার দরকার নেই। ওখানের ফার্ম হাউস টা তে সব দরকারি জিনিস ই আছে। পরশু দিন সকাল সাতটাটে দেখা হচ্ছে।

নন্দিনী: ওকে, শি ইউ টুমরো। অনেক দিন পর কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি। তাও তোমার সাথে। আই অ্যাম একসাইটেড।
জুন: একবার চল আমার সঙ্গে দেখবি তোর এক্সাইটমেন্ট আরো বাড়বে। আর এই সমস্যা টা কেটে যাবে। আমরা খুব আনন্দ করবো।”

(চলবে)

Exit mobile version