ঈদিপাস পর্ব ১

অ্যাকাডেমি থেকে সেবার এক্সকারশানে গেলাম কক্সবাজার। বিশাল রিসোর্ট বুক করা হল। ছেলে আর ছেলে। টিনেজের শেষভাগে এসে এত ছেলের সাথে থাকতে ভাল লাগে না। অ্যাকাডেমিতে শেষ কবে মেয়ে দেখেছি মনেও নেই৷ এমন না যে সুযোগ নেই। কোটা আছে, ১০০% সুযোগ আছে। কিন্তু মেয়েরা কেন যেন অ্যাকাডেমিতে আসতেই চায় না। অথচ পুলিশ আর আর্মিতে ঠিকই যাওয়ার জন্য এক পায়ে খাড়া থাকে।

যাহোক। একদিন সবাই মিলে রাতে ঘুরতে গেলাম বীচে। এমন সময়ে বীচে ভিড় অনেক কম থাকে। রিসোর্টের সামনের বীচ প্রাইভেট প্রপার্টি। বাইরের লোকের আনাগোণা কম। তীব্র বাতাস শীত শীত লাগছে। হুট করে বললাম, “চল বীচে নামি।”

বন্ধুরা তীব্র ভাষায় আমার প্রস্তাব নাকচ করে দিল। অলক তার কাধের ঝোলা ব্যাগ থেকে এক বোতল রাম দেখিয়ে বলল, “সাগরে নামব না। সাগর মাথায় উঠিয়ে নেব।”
তার এই প্রস্তাব সর্বান্তকরণে সমর্থন পেল। আমি বললাম, “আমি আসতেছি তাহলে। আমার জন্য রাখিস৷ বলতে বলতে শার্ট প্যান্ট খুলে ফেললাম। পরণে শুধু বক্সার।
সবার তীব্র নিষেধ সত্ত্বেও ছুটে গিয়ে ঝাপিয়ে পড়লাম রাতের সাগরের কাক কালো জলে।

অ্যাকাডেমিতে ভর্তির আগে আমি সাতার জানতাম না। এখানে আসার পর খুব ভাল সাতারু হয়ে উঠেছিলাম। প্রথমে প্রচন্ড ঠান্ডা লাগলেও কিছুক্ষণ পর পানি সহনীয় হয়ে উঠল। দ্রুতই গভীর পানিতে চলে এলাম। সাগরের বুকে ফসফরাসের আলো। দূরে তীর দেখা যায়। আমি গা ভাসিয়ে চিৎ হয়ে আকাশের দিকে তাকালাম।

রূপোর থালার মত গোলাপি বিশাল এক চাঁদ উঠেছে আকাশে। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি এমন সময়ে হঠাৎ চোখের কোণে খেয়াল করলাম কালো কিছু একটা পানিতে সাতার কেটে এগিয়ে আসছে আমার দিকে। প্রথমে ভয় পেয়ে গেলাম। এই সাগরে হাঙ্গর নেই। অন্য কোন প্রাণী না তো? সাথে সাথে সাতরে সিধে হলাম। এতক্ষণ খেয়াল না করলেও এবার প্রাণীটা খেয়াল করেছে আমাকে। ভয় পেয়ে খানিক পিছিয়ে গেল। ভয়ে আয়াতুল কুরসি ভুলে গেছি। দুহাতে ছপছপ করে পানিতে বাড়ি দিলাম ভয় দেখানোর জন্য। তখনই রিনরিনে একটা কন্ঠ বলল, ” ভয় পাবেন না, আমি মানুষ।”

আমি থতমত খেয়ে গেলাম। সাহস করে কাছে এগিয়ে গেলাম।
মানুষই বটে। অন্ধকারে ভাল বোঝা না গেলেও মানুষটি যে স্ত্রী গোত্রের তা বুঝলাম।
“এত রাতে সাগরে কি করছেন?”
“ফুটবল খেলছি। আপনি কি করছেন?”
“আমি তো ক্রিকেট খেলতে এসেছি। আপনার ভয় করল না?”
“না তো। ভয় পাব কেন? আমি জয়া।”
“আমি রাজীব।”
“কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে দেখেছেন?”
“হ্যা। ব্লাড মুন চলছে।”
“আসেন ডুব দেই।”
“ডুব দেব?”
“হ্যা, ডুব সাতার জানেন না?”
“জানি…”
“তাহলে আসেন।”

বলতে বলতেই জয়া ডুব দিল। কি করব না করব বুঝতে পারছি না৷ তবুও কি আছে জীবনে ভেবে ডুব দিলাম। পানির নিচে চাদের আলোয় অনেকটাই পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। আমি স্তম্ভিত হয়ে লক্ষ্য করলাম জয়ার গায়ে কোন পোশাক নেই৷ ভরাট তুলতুলে দোহারা একটা নারীদেহ৷ চাদের আলোর মত ধবধবে গায়ের রঙ। স্ফীত উচু হয়ে থাকা পূর্ণ আকৃতির স্তনজোড়া বেলুনের মত ফুটে আছে বুকের ওপর। গায়ে পরিমিত মেদ। ভরাট চওড়া নিতম্বের তালদুটো বুদবুদের মত ফুটে আছে। গভীর নাভির নিচে ভি আকৃতির যোনি৷ সেখানে সুন্দর করে ট্রিম করা যৌনকেশ৷ কলাগাছের মত চওড়া পেশিবহুল উরু। কার্ভি শরীর, তবে থলথলে চর্বিদার নয়। আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড় হবে। কাঠবাদাম আকৃতির মুখ। পাতলা ঠোট৷ পানিতে খোলা চুল মেঘের মত ভাসছে মাথাটাকে ফ্রেম করে। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখলাম৷ মনে হল গ্রীক ভাস্করের কোন মূর্তি, জলকণ্যা।
আমার শরীর এই তীব্র ঠান্ডাতেও জেগে উঠতে চাইল।

আমাকে স্থানুর মত ভাসতে দেখে নিজেই এগিয়ে এল সে। হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল আমাকে। এক মিনিট পর দুজনেই আবার ভেসে উঠলাম।
“আপনাকে প্রাপ্তবয়স্ক ভেবেছিলাম। আপনি তো বাচ্চা ছেলে।” বলল সে৷
“মোটেই না। আঠারো বয়স আমার।”
“আঠারো বছর তাই না? দারুণ একটা বয়স।”
“আপনার কত?”
“মেয়েদের বয়স জানতে নেই বোকা ছেলে।”

জয়া আমাকে ঘিরে চক্কর দিয়ে আবার সামনে এসে থামল।
আমি বললাম, “আপনাকে ধন্যবাদ।”
“কেন?” জয়া অবাক কন্ঠে প্রশ্ন করল।
“আজ আমি আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যটা দেখেছি। আপনি এনকারেজ না করলে কখনো হত না।”
জয়া একটু লজ্জা পেল, “তোমাকে এখানে এক্সপেক্ট করিনি আসলে। আমি যেখানে থাকি সেখানে স্কিনি ডিপিং খুব কমন ব্যাপার। আমিও করেছি। তবে একা। এই প্রথম সাথে দ্বিতীয় কেউ ছিল।”
“কেন আপনার হাজব্যান্ড?” আন্দাজ করেই নিলাম সে বিবাহিত।
“বিয়েই করিনি।”
“বয়ফ্রেন্ড?”
“ট্রায়িং ইয়োর লাক?” হাসল জয়া।৷ “না। কখনো হয়নি।”

আমি নাক দিয়ে একটা শব্দ করলাম। কেউ মিথ্যা বললে তাচ্ছিল্য করে আমি এমন করি। জয়া বুঝতে পারল। বলল, “আমার একটা ডার্ক পাস্ট আছে। আমি চেষ্টা করেও কখনো কারো সাথে ক্লোজ হতে পারিনি।”
“ওহ সরি।”
“না না ইটস ওকে। সামনে একটা বোট আছে। চলো ফিরে যাই।”
“আমি সাতরে যেতে পারব। আর তীরে আমার বন্ধুরা আছে।”
“আমাকে তো বোটে যেতেই হবে। আমি এভাবে নিশ্চয়ই তোমার বন্ধুদের সামনে যেতে পারি না।”
“তা তো অবশ্যই। চলুন আপনাকে এগিয়ে দেই।”
“আরে না। লাগবে না।”
“না, চলুন। আই ইনসিস্ট।”

দুজনে সাতরে গেলাম। অদুরেই একটা ছোট্ট ডিঙ্গি ভাসছিল। আগে চোখে পড়েনি। জয়া দুহাতে একটা কানা আকড়ে ধরে শরীরটা টেনে তুলল। আমি সাহায্য করতে গিয়েও পারলাম না৷ অপরিচিত নারীর নগ্ন শরীরে চাইলেই হাত দেওয়া যায় না। বোটে উঠে একটা লন্ঠন জ্বালাল সে। আলোতে আরেকবার দেখতে পেলাম তাকে। মিষ্টি গোলগাল মুখ, অনেকটা পানপাতা বা কাঠবাদামের মত আকার, পাতলা ঠোট৷ চিকন নাকের বাশি, ছোট্ট আদুরে নাক। বড় বড় টানা টানা চোখ। চিকন ধনুকের মত ভ্রূ। ভেজা চুলগুলো নেমে এসেছে ভরাট বুকের ওপর। একটা স্তন ঢাকা পড়ল। আরেকটা এখনও উন্মুক্ত। স্ফীত ভরাট মাংসপিন্ডের ওপর কালচে বাদামী এরিওলা, তার মধ্য থেকে মাথা তুলে আছে গোলগোল আদুরে বোটা। স্তনগুলো নুয়ে পড়েনি। মনে হল স্তনটা তাকিয়ে আছে আমার দিকেই। চওড়া কোমর, গভীর নাভী। ছোট ছোট ট্রিম করা চুলের অরণ্যে লুকিয়ে থাকা যোনি। বুদবুদের মত নিতম্বের দুই পাশ৷ আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি।

জয়া বলল, “ইটস রুড টু লুক অ্যাট সামওয়ান লাইক দিস।”
আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। “সরি।”

ডিঙ্গির ওপর একটা ট্র‍্যাকস্যুট ছিল। সেটা পড়ে নিল সে। “তুমি কি সত্যিই লিফট চাও না?”
“না, ঠিক আছে।”
“ওকে। দেন স্টার্ট টু সুইম। আমি রিসোর্টে উঠেছি। আশা করি দেখা হবে।”
“আচ্ছা।”
“আছো তো কিছুদিন।”
“হ্যা। আর দুইদিন। ছুটি নেই তো।”
“কলেজের?”
“না আমি আসলে…” থেমে গেলাম। আমাদের অ্যাকাডেমির নাম বাইরে বলার নিয়ম নেই। তবে কেন যেন এই রমনীর কাছে নিয়মটা ভাঙতে ইচ্ছা করল।
“কি?” উত্তরের অপেক্ষায় আছে সে।
“আমি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে পড়ি একটা।”
“ও আচ্ছা।” জ্যাকেটের চেইন টান দিতেই সুন্দর স্তনজোড়া চোখের আড়ালে চলে গেল।

আমি পায়ের ধাক্কায় সরে গেলাম বোট থেকে দূরে। ছোট ছোট স্ট্রোক দিয়ে সাতরে যেতে শুরু করলাম তীরের দিকে। এখনও মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখেছি এতক্ষণ। একবার মাথা ঘোরাতেই ধীরে ধীরে তীরের দিকে এগোতে থাকা লন্ঠনের আলোটা দেখতে পেলাম। মাথায় এখনও জয়ার নগ্ন শরীরটা ঘুরছে।
তীরে উঠে এসে বন্ধুদের পাশে ধপ করে শুয়ে পড়লাম। শরীর একটু একটু কাপছে।
সাদ্দাম রামটা এগিয়ে দিল। “খাও মামা, শরীর গরম হইবেয়ানে।” একটু সময় তাকিয়ে রইল সে আমার দিকে। “কি হইছে তোর?”
“কই কিছু না তো।”
“তাইলে খাড়ায়া আছে ক্যান?” আঙুল তাক করল সে আমার কুচকির দিকে। সবাই একযোগে তাকাল সেদিকে।
আমি তাকাতেই দেখি আমার পুরুষাঙ্গ পূর্ণ তেজে খাড়া হয়ে একটা তাবু তৈরি করেছে আমার বক্সারের সামনে। অপ্রস্তুত হয়ে দুইহাতে ঢেকে ফেললাম। “ঠান্ডায় মনে হয়।”
“তো কাপড় পিন,” হাসিব বলল। “আমার তো মনে লয় ওরে মৎস্যকণ্যা চুইদা দিছে”

সবাই হাসতে শুরু করল। অপ্রকৃতস্থ মাতালের হাসি।
এক ঢোক রাম খেয়ে মাথা থেকে জয়ার নগ্ন শরীরটা ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলাম। তবুও চোখের সামনে দৃশ্যটা রয়েই গেল যেন।
ঘোরের মধ্যেই সেরাতে ঘুমাতে গেলাম।

পরদিন সকালে নাস্তা করে লবিতে বসেছি। একটু পর সবাই বাইরে যাব। এমন সময়ে জয়াকে দেখতে পেলাম। লিফট থেকে নেমে বের হবার দরজার দিকে হাঁটতে শুরু করল। আমি উঠে প্রায় ছুটে গেলাম, “জয়া!” ডাকলাম।

সাথে সাথে ঘুরে তাকাল সে। তার পরণে শার্ট আর ট্রাউজার। কাধ থেকে ঝুলছে ক্যামেরার ব্যাগ। চোখে সানগ্লাস। মাথায় বেসবল ক্যাপ।
“আরে মৎস্যকুমার যে…” জয়া হেসে বলল।
“কোথায় যাচ্ছেন?”
“হিমছড়ি। যাবে?”
“আমার বন্ধুদের সাথে বের হবার কথা আছে।”
“ও আচ্ছা। সি ইউ দেন।”
“না থাক… আপনার সাথেই যাই।” ওদের একটা মেসেজ করে বলে দেব যে যাওয়া হচ্ছে না।
“শিওর?”
“হ্যা হ্যা। কোন সমস্যা নেই।”
“ওকে, চলো।”

জয়ার সাথে একটা হুডখোলা জীপে করে রওনা হলাম। জয়া পেছনের সিটে আমার পাশেই বসেছে। ওর চুলগুলো উড়ে আমার মুখে লাগছে। অদ্ভুত ভালোলাগায় ছেয়ে গেল আমার মন।
“আপনি কি দেশের বাইরে থাকেন?”
“হু। স্টেটসে। কিভাবে বুঝলে?”
“বাংলাদেশে কেউ স্কিনি ডিপিং করে না।”
“হা হা… আচ্ছা তাই?”
“হ্যা।”
“কত বছর ধরে আছেন?”
“ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়েছিলাম। আর ফেরা হয়নি।”
“বাংলাদেশে কেউ নেই?”
“নাহ। মা বাবা মারা গেছে। এক খালা আছে, কিন্তু যোগাযোগ হয় না৷ চাচাদের সাথে তো আরও আগে থেকে নেই। আমি এই প্রথম ফিরেছি।”
“কোন স্পেসিফিক কারণে?”
“হ্যা। তা বলতে পারো।”
“কক্সবাজারেই?”
“না, না। এখানে এসেছি একটা এসাইনমেন্টে। প্রথমে সেন্ট মার্টিনস গিয়েছিলাম। খুব ঝামেলা ওখানে। তাই ফিরে এসেছি। এখানে যে ছবিগুলো তুলব তা নিউ ইয়র্কের টাইমস ম্যাগাজিন কিনে নেবে।”
“আপনি ফটোগ্রাফার?”
“হ্যা। তুমি জয়িতা ইব্রাহীমের নাম শুনেছো?”
“না তো।”
“ও আচ্ছা। অবশ্য পুলিৎজার তো নোবেল না।”
“বলেন কি!”
“হু। দেশে কেউ পাত্তা দেয় না।”
“না না। দেয় তো। পুলিৎজার তো সাংবাদিকতার নোবেল বলা যায়।”

জয়িতা হাসে। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি। হিমছড়িতে গিয়ে সে ক্যামেরা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়। পাহাড়ের ওপরে উঠে সাগরের স্ন্যাপ নিল। তারপর ঝাউ বনের। এরপর রাস্তা পেরিয়ে বীচে গিয়ে ডাঙ্গায় তোলা জেলে নৌকা।

আমি বোর হচ্ছি। বয়স কত হবে জয়ার? ত্রিশ বত্রিশ? আমার ভাগ্যে শিকে ছিড়বে না৷ কেন এলাম আমি, কিসের আশায়? ও দীর্ঘদিন আমেরিকায় আছে। নগ্নতাকে ওদের দেশে আমাদের চোখ দিয়ে দেখা হয় না। ওর নগ্ন শরীর দেখে আমি মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছি। ওর কিছুই আসে যায় না তাতে। নিজের বোকামিতে নিজেকেই লাথি মারতে ইচ্ছে করল। বালুর ওপর বসে বসে ওর ছবি তোলা দেখলাম। আমার দিকে মন নেই ওর একদমই। ভারী অভিমান হল আমার। একটা কুকুর এসে বসল আমার পাশে। আমি হাত বাড়িয়ে ওর কানটা চুলকে দিলাম। প্রথমে সিটিয়ে গেলেও আবার ঠিকই আদর নিল। দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। আমার পাশে এবার শুয়ে পড়ল কুকুরটা। আমি অপেক্ষা করতে শুরু করলাম।

দীর্ঘ সময় পর সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়তে জয়ার ছবি তোলা শেষ হল। জেলেরা বিদায় নিয়েছে। সম্ভবত হিমছড়ির দর্শনার্থীরাও।
“রাজীব এদিকে এসো।” জয়া হাত নেড়ে ডাকল।
আমি উঠে দাঁড়িয়ে প্যান্ট ঝেড়ে এগোলাম। অভিমান এখনও ষোল আনাই আছে আমার মনে। কিছু করার নেই। ফিরে যেতে হলে ওর ওপর নির্ভর করতেই হবে আমার।
“কি? খুব বোর হলে?”
“না, না। তেমন না।”
“বুঝতে পারছি। তুমি আমার সাথে সময় কাটাতে চেয়েছিলে। বাট আমি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এসো তোমাকে আমার কাজ দেখাই। ক্যামেরা খুলে কয়েকটা ছবি দেখাল সে আমাকে। অনেক কায়দার ক্যামেরা। নিশ্চয়ই খুব দামী। অনেক ছবি স্ক্রল করতে করতে একটা ছবি দেখে চমকে উঠলাম। ধীরে ধীরে আরও অনেকগুলো ছবি দেখাল সে আমাকে। কখন তুলল এগুলো? আমি খেয়ালই করিনি। পাহাড়ের ওপরে আকাশের পটভূমিতে, কুকুরের সাথে পাশাপাশি বসে। আমারই প্রায় ষাট সত্তুরটা ছবি। প্রতিটা ছবিই সুন্দর।

জয়া বলল, ” তোমাকে না বলে তুলেছি তাই সরি। আমি কি এক্সিবিশনে এই ছবিগুলো ব্যবহার করতে পারি?”
আমার ছবি! অসম্ভব। আমাদের ছবি ফেসবুকে আপলোড করাই নিষেধ। সেখানে এক্সিবিশনে তো অসম্ভব। আমার উচিত ওর ক্যামেরার মেমোরিকার্ডটা নিয়ে সেটা চিবিয়ে ভেঙে ফেলা আমি বললাম, “যেটাতে আমি কুকুরের পাশে বসে সাগর দেখছি ওটা নিয়েন।”
“বাকিগুলো?”
“না। প্লিজ। ওগুলো না।”
জয়া একটু অবাক হল। “কেন?”
“করা যাবে না।”
“বলতে চাও না?”
“না, সরি।”
“ইটস ওকে। আমি কি ডিলেট করে দেব ছবিগুলো?”
“না, আমাকে দিয়েন। ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আমি রেখে দেব।”
সন্ধ্যা নামছে ধীরে ধীরে। আমি আর জয়া পাশাপাশি বেলাভূমিতে বসলাম। জয়া খানিকটা ডিসট্যান্ট হয়ে গেছে। আমি ভাবলাম আইস ব্রেকার হিসেবে ওকে বলি। কেন জানি না আমার খুব ইচ্ছে করল ওকে বলতে।
“জয়া, আপনি জিজ্ঞেস করেছিলেন না আমি কেন ছবি দিতে মানা করছি?”
“না, ইটস ওকে। তোমার পার্সোনাল রিজন আমি আর জানতে চাইছি না।”
“সত্যিই জানতে চান না?”
“না।”
“আমার বলতে ইচ্ছে করছে। কেন যেন মনে হচ্ছে আপনাকে বলা যায়৷ আপনি বুঝবেন।”
জয়া অবাক হল। “কি ব্যাপার বলো তো।”

আমি তখন তাকে সব খুলে বললাম। প্রতিটা দেশে যেমন মিলিটারি, নেভি, এয়ারফোর্সের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকে। তেমন থাকে গোয়েন্দাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আমি অমন একটা অ্যাকাডেমিতেই পড়াশোনা করি৷ আমাদের পরিচয় গোপন রাখতে হয়৷ ভূতের মত। আমাদের কাজ খুব রিস্কি। পরিচয় প্রকাশ করা নিষেধ৷ আমি ফেসবুক দেখালাম তাতে। আমার কোন ছবি নেই আইডিতে। নানা রকম পোস্ট আছে। বেশিরভাগই উদ্ভট। নামে মাত্র।
কথা শেষ হতে আমি বললাম, “আপনিই প্রথম যাকে আমি এসব বলছি।”
“তুমি তাহলে স্পাই?”
“এখনও না। ট্রেনিং চলছে। এরপর হব।”
“জেমস বন্ডের মত?”
“ঠিক জেমস বন্ডের মত না। মিশন ইম্পসিবলের ইথান হান্টের মত। টম ক্রুজ।”
“দারুণ তো। তোমার মা বাবা জানেন?”
“না, উনারা জানেন আমি এখনও তাদের ইচ্ছামত ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি।”
“আজব তো! টেল মি সামথিং মোর।”
“না, আর কিছু বলা যাবে না। যেটুকু বলেছি এটুকুর জন্যও আমাকে বিপদে পড়তে হতে পারে।”
“বল কি!”
“হ্যা।”
“তাহলে কেন বললে?”
“জানি না। আপনি আমাকে এক ধরণের ঘোরের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।”

জয়া সামান্য ঝুকে এসে আমার ঠোটে ঠোট ছোয়াল। প্রথমে স্বল্প। তারপর দীর্ঘ চুমু খেল। অনেকক্ষণ একে অন্যের ঠোটে ডুবে রইলাম আমরা।
জয়া এরপর ঠোট সরিয়ে বলল, “আমার বয়স থার্টি ফোর। আশা করি বুড়িতে আপত্তি নেই তোমার।”
“ধুর কি যে বলেন!”
“তোমার বয়স আঠারো তো?”
“হ্যা। আইডি দেখবেন?”
“না তার আর দরকার নেই। ওঠো।”
“কোথায়?”

জয়া আমাকে নিয়ে একটা জেলে নৌকার খোলে উঠে গেল। খোলে উঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল অনেকক্ষণ। পরস্পরের ঠোট চুষতে শুরু করলাম আমরা।
জয়া হাপাতে হাপাতে বলল, “তোমার এর আগের সেক্সুয়াল এক্সপেরিয়েন্স আছে?”
“আছে কিছু। খুব বেশি না।”
“গুড। আমি নবিশের হাতে পড়তে চাই না।”
আমি হেসে ফেললাম।

জয়া দ্রুত হাতে শার্টের বোতাম খুলল। কাল রাতের স্তনজোড়া আজ গোলাপী ব্রেসিয়ারে ঢাকা। আমি টিশার্ট আর শর্টস পড়ে ছিলাম। সেগুলো খুলে ফেললাম। ভণিতা না করে নামিয়ে নিলাম বক্সারটা।