দিবাকরের বাড়ি পৌঁছে আগে বীর্যেশ্বর সঞ্জয়ের ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে জানাল খুলে ফেললো। বীর্যেশ্বর জানালা খুলে দেখে মুন্নী কম্বল দিয়ে দেহ ঢেকে সঞ্জয়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। তার পাশে পড়ে আছে সকালের শাড়িটা। বীর্যেশ্বর তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্য জানালার বাহিরে দাঁড়িয়ে ঘর থেকে শাড়িটা নিয়ে এলো। বীর্যেশ্বর শাড়িটা লতাকে পড়তে দিলো। এতে লতা চট করে শাড়িটা পড়ে নিল।
লতা শাড়ি পড়ে নিলে বীর্যেশ্বর লতার হাতের তালুতে আলতা লাগিয়ে গামছা নিয়ে গাছের ঝোপে লুকিয়ে পড়লো। লতা আসতে আসতে রত্নার জানালার দশহাত পাশে দাঁড়ালো। লতা বীর্যেশ্বরকে ইশারা দিতে বীর্যেশ্বর তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে জানালাটা খুলে বন্ধ করে আবার খুলে দিল। জানালা খোলার শব্দ পেয়ে রত্না ঘুম থেকে উঠে খোলা জানালাটা বন্ধ করে ঘুমাতে যাবে তখনি বীর্যেশ্বর লতাকে ইশারা দিতে লতা জানালার উপর ধব করে হাতের তালুর চাপ বসিয়ে সরে পড়লো। জানালার শব্দ পেয়ে রত্না ঘুরতে হাতের চাপ দেখে ঘাবড়ে গেলো। লতা রত্নার সামনে হেঁটে সঞ্জয়ের ঘরের দিকে গেল। তা দেখে রত্না তার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। এই সুযোগে বীর্যেশ্বর জানালায় হাতের চাপ মুছে দিবাকরের বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে লাগলো। ততক্ষণে লতা শাড়িটা খুলে সঞ্জয়ের ঘরের দিকে ছুড়ে মেরে জানালা লাগিয়ে বেরিয়ে এলো। বীর্যেশ্বর ও লতা নিজের আশ্রমে চলে এলো।
পরেরদিন সকালবেলা বীর্যেশ্বর ধ্যানে দেখে রত্না তার মন্দিরে আসছে। এদিকে এক বাবা মা তার পাগল মেয়েকে সুস্থ করার জন্য মন্দিরে নিয়ে এসেছে। বীর্যেশ্বর দুধের সাথে ঘোল মিশিয়ে রাখলো আর লতাকে পাগল মেয়েটা সহ তার বাবা মাকে ভিতরে আসতে বললো।
পাগল মেয়েটি তার সামনে বসতে বীর্যেশ্বর পাগল মেয়েটার গায়ে জল ছিটিয়ে বললো- বল! তুই কে?
মেয়েটি কিছু বলছে না। শুধু টলতে আছে। বীর্যেশ্বরের মাথা গরম হয়ে গেলো। চাতুর দিয়ে পাগল মেয়েটাকে আঘত করতে করতে বললো- তুই কার ভূত? বলতে থাক! বল! তুই বলবি!
বীর্যেশ্বর লতাকে ইশারা দিয়ে দুধের সাথে ঘোল মিশানো দুধটা খাইয়ে দিতে। লতা পাগল মেয়েটাকে ঘোল মেশানো দুধটা খাবিয়ে দিল।
বীর্যেশ্বর- এখন বলবে! বল! কথা বল! তোর নাম কি? বল!
বীর্যেশ্বর দেখে রত্না বাহিরে দাঁড়িয়ে। বীর্যেশ্বর রত্নাকে আশ্রমে চলে যেতে ইশারা করতে। রত্না চলে গেলো।
বীর্যেশ্বর- কবে থেকে তুই ওর দেহ দখল করেছিস?
বলে জল আর চাতুর দিয়ে ঝাড়তে লাগলো। পাগল মেয়েটার বাবা- হ্যাঁ, গুরুজী, সে গত ৩ বছর ধরে সমস্যায় আছে।
বীর্যেশ্বর একটু ধ্যান করে আবার বলে উঠলো- শিমলা তোর নাম? এইবার বল কবে যাবি এই শরীর ছেড়ে! বল! বল! কবে যাবি এই শরীর ছেড়ে! কবে? বল! বল! কবে ছাড়বি ওর শরীর! বল! কবে যাবি ওর শরীর ছেড়ে! বল!
বলে চাতুর দিয়ে পাগল মেয়েটাকে ঝাড়তে লাগলো। পাগল মেয়েটা বলে উঠলো- চলে যাবো! চলে যাবো!
বীর্যেশ্বর জল ছিটিয়ে দিতে পাগল মেয়েটাকে বেহুশ হয়ে পরে গেলো। বীর্যেশ্বর এবার আশ্রমে এসে রত্নার সামনে বসলো।
বীর্যেশ্বর- আজ কেন এলি তুই?
রত্না- আমার বাড়িতে আমি খারাপ বাতাসের অনুভূতি পেয়েছি গুরুজী। আমাদের বাড়িটাকে বাঁচান গুরুজী! আমাদের বাড়িটাকে বাঁচান! না হলে ঐ ডাইনি! ঐ ডাইনি…!
বীর্যেশ্বর মনে মনে খুশি হলো। বীরেশ্বর বললো- তুই বাহিরে যা আমি আসছি।
বীর্যেশ্বর বলতে রত্না বাহিরে বেরিয়ে গেলো। বীর্যেশ্বর পোটলায় বেশি করে ঘোল আর খাটপাতার রস নিয়ে নিলো। বীর্যেশ্বর বেরিয়ে বললো- চল তাহলে তোর বাড়িতে।
রত্না- চলুন গুরুজী।
বীর্যেশ্বর- লতা তুই এখানে পাহারা দে আমি আসছি। চল রত্না।
রত্না- আসুন গুরিজী।
বলে রত্না বীর্যেশ্বরকে নিয়ে দিবাকরের বাড়িতে গেলো।
রত্না- আসুন গুরিজী! বসুন।
বীর্যেশ্বর- রত্না, তুই বরং দুধ জ্বাল দে সাথে লবঙ্গ দিয়ে ফুটাবি।
রত্না- গুরুজী আপনি কিছু মুখে নিবেন না।
বীর্যেশ্বর- আমার জন্য দুধ নিয়ে আয় যা।
রত্না চলে যেতে বীর্যেশ্বর নিজের বাঁড়া মালিশ করতে লাগলো। ততক্ষণে রত্না বীর্যেশ্বর ও মুন্নীর জন্য দুধ নিয়ে এসেছে। রত্না বীর্যেশ্বরকে দুধের মগ এগিয়ে দিতে বীর্যেশ্বর রত্নার হাত থেকে মগ নিয়ে ঢোক ঢোক করে সব দুধ গিলে ফেললো। এবার রত্না বীর্যেশ্বরকে নিয়ে মুন্নীর ঘরে নিয়ে গেলো। মুন্নী তখন শুয়াতে। বীর্যেশ্বর কুন্ডি বন্ধ করে দিলো। বীর্যেশ্বরকে দেখে মুন্নী ভয়ে উঠে বসলো। বীর্যেশ্বর মুন্নীর পাশে বসতে মুন্নী দূরে সেরে লাগলো। তখন বীর্যেশ্বর বললো- ভয় পাওয়ার কোন দরকার নেই। মুন্নী, আমি যা কিছু করছি তোর এবং তোর বাড়ির ভালোর জন্য করছি। এইজন্য ভয় পাওয়ার কোন দরকার নেই। আমার দিকে তাকা।
মুন্নী- মা, সঞ্জয়কে ডেকে দিন।
বীর্যেশ্বর- চুপ কর। প্রথমে তোর দেহের গভীরে বসে আছে। তার উপর নাটক করছিস।
মুন্নী- আমার শরীরে কিছু নেই। কিছু নেই শরীরে। আপনি কী করার জন্য ভাবছেন?
বীর্যেশ্বর- রত্না, দুধটা এদিকে দে।
মুন্নী- মা দিবেন না। মা সত্যি বলছি আমার ভিতর কিছু নেই মা।
রত্না বীর্যেশ্বর হাতে দুধের মগ এগিয়ে দিতে বীর্যেশ্বর পোটলা থেকে ঘোল ও খাটপাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে নাড়াতে লাগলো।
মুন্নী- এগুলো কি মিশাচ্ছেন আপনারা? না, মা। আমি এটা পান করব না।
বীর্যেশ্বর এগিয়ে যেতে মুন্নী হাত ছুড়া ছুড়ি করতে লাগলো। রত্না মুন্নীর হাত ধরে রাখলো। বীর্যেশ্বর দুধর মগ মুন্নীর সামনে এগিয়ে নিতে! মুন্নী বলতে লাগলো- মা না, আমি খাবো না।
বীর্যেশ্বর- এই দুধ খাও, মুন্নী।
মুন্নী- না।
রত্না- এটা পান করো।
বীর্যেশ্বর- তোকে অবশ্যই পান করতে হবে, মুন্নী।
বলে বীর্যেশ্বর মুন্নীর মুখ চেপে ধরে দুধ মুখে দিতে যাবে। এমনি মুন্নী হাত পা ছোড়া শুরু করলো।
বীর্যেশ্বর- পান কর, মুন্নী। এটা তোর উন্নতির জন্য, মুন্নী। চল, পান কর। আমার কথা শোন।
সঞ্জয়- মা!
মুন্নী- সঞ্জয়।
সঞ্জয়- কুন্ডি খোলো মা।
মুন্নী- সঞ্জয়।
মুন্নী বীর্যেশ্বর ও রত্নাকে ঠেলে কুন্ডি খুলে বাহিরে গেলো। রত্নাও বেরিয়ে গেলো। সেই সুযোগে বীর্যেশ্বর আলমারি থেকে মুন্নীর বিয়ের ঘোমটার আঁচলটা পোটলাতে ঢুকিয়ে বেরিয়ে এলো।
মুন্নী- সঞ্জয়!
সঞ্জয়- মা, এটা কি?
রত্না- গুরুজী বলেছেন তার উপর পেতআত্মা ভর করেছে!
সঞ্জয়- কি আজেবাজে কথা? গুরুজি, দয়া করে। বাবা বেঁচে থাকা পর্যন্ত ঠিক ছিল। এখন, যখন তিনি আর নেই, আপনিও আমাদের সাথে দেখা বন্ধ করুন।
রত্না- তুই কি বলছিস?
সঞ্জয়- ঠিক তুমি যা শুনেছো। আর যদি তোমার কোন সমস্যা হয়, মুন্নী আর আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।
বীর্যেশ্বর- তোমার পুত্রবধূকে যে পেতআত্মা ভর করে রেখেছে তাকেই এসব করাচ্ছে।
সঞ্জয়- এসো… আমার সাথে এসো।
বীর্যেশ্বর রেগে গেলো। বীর্যেশ্বর পোটলা নিয়ে রেগে “সে আমাকে ডাকবে” বলতে বলতে তার আশ্রমে চলে গেলো।
বীর্যেশ্বরকে রেগে মেগে ঢুকতে দেখে লতা বললো- কাজ হয়েছে গুরুজী!
বীর্যেশ্বর- না রে।
লতা- তাহলে কি হবে? আপনি কি হেরে গেলেন গুরুজী?
বীর্যেশ্বর পোটলা থেকে ঘোমটার আঁচলটা বের করে বললো- শুন লতা, তুই আর কমলা এখন থেকে প্রতি রাতে দিবাকরের বাড়ির দিকে নজর দিবি। যখনি দেখবি মুন্নী রত্নার ঘরে যাবে তখনি লতা তুই রেডি থাকবি। মুন্নীর বিয়ের ঘোমটার আঁচলটা দিয়ে রত্নার গলা টিপে দিবি। রত্না যখন উঠে পড়বে তখন তুই তখন সরে পরবি। আর জানালা খোলা দেখে রত্না যখন চীৎকার করে সবাইকে ঘরের বাইরে এক জায়গায় জড়ো করবে তখন তুই পালঙ্কে আঁচলটা ছুড়ে মেরে চলে আসবি। আর কমলা, তুই ওরা আসার আগে আমি যা বলবো তা জানলায় লেখে দিয়ে আসবি। তারপর দেখি কেমন করে সঞ্জয় তার স্ত্রীকে বাঁচায় আমার হাত থেকে।
বলে বিশ্রাম নিতে চলে গেলো।
চলবে…
এই গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন অথবা টেলিগ্রাম বা ই-মেইল আইডি @gorav1352 / deshgorav1352@gmail.com এই ঠিকানায় আপনাদের মতামত পাঠাতে পারবেন আপনাদের কমেন্টে আমাকে নতুন পর্ব তৈরি করতে উৎসাহ করবে। বেশি বেশি চটির গল্প পড়ে লাইক কমেন্ট করুন।
ধন্যবাদ।